সেলিম রেজা, নীলফামারী: নীলফামারী সদর উপজেলা পঞ্চপুকুর ইউনিয়নের ঘোনপাড়া এলাকায় শত্রুতার জের ধরে আনছার আলীর ছেলে মোঃ মঞ্জেল ইসলাম, মামুদের ছেলে আনাকুল ও মাহমুদ নামে একই এলাকার মোঃ আমিনুর রহমানের ছেলে রওশন আলীকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয় নীলফামারী সদর থানায় আপন চাচা মোঃ রফিকুল ইসলাম একটি মামলা দায়ের করে। যাহার মামলা নং-২৪। মামলার ১৯ দিন পরেও কোন আসামি গ্রেফতার হয়নি। আসামিদের দ্রুতে গ্রেফতারের দাবি জানায় এলাকাবাসি ও পরিবারের স্বজনরা। মামলা তুলে না নিলে এক এক করে পরিবারের সকল সদস্যদের হত্যা করবে এমন হুমকি দিচ্ছে আসামিরা।
এজাহার সুত্রে জানা যায়, গত (১৬ মার্চ) রোববার সকালে রফিকুল ইসলামের ছেলে শাহজালাল আনছার আলীর বাড়ির পাশ দিয়ে তাদের হাঁসের খামারে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে মঞ্জেল ইসলাম, ছলে মামুদ ও আনাকুল পথ রোধ করে কিছু বুঝে উঠার আগেই তাকে এলোপাথারি মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে গলায় সাইকেলের চেইন পেচিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। তার চেঁচামেচিতে স্থানীয়রা দৌড়ে এসে কোন রকমে উদ্ধার করে তাকে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করায়। সে সময় তারা বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করে। পরদিন সকালে রওশন আলী নিজের হাঁস খামারের হাঁসদের খাবার দিচ্ছিল সে সময় আনাকুল ও মঞ্জেল এসে এলোপাথাড়ি মারপিট ও পেটে ধারালো ছুড়ি চালিয়ে হত্যা চেষ্টা করে। এমবস্তায় স্থানীয়রা এসে তাকেও উদ্ধার করে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, রওশনের হাঁসের খামার রয়েছে আনছার আলীর বাড়ির পিছনে। তাছাড়া তাদের আবাদি জমিও আনছার আলীর বাড়ির পিছনে। তাদের জমিজমা নিয়ে ঝগড়াঝাটি হয়েছিল অনেক আগে, এ বিষয়ে মামলাও চলমান। আর আনছার আলীর বাড়ির সামনে দিয়ে রফিকুল ও রওশন আলীর পরিবারের লোকজনকে জমি ও খামারে যেতে হয়। তবে আনছার আলীর ছেলে তেমন বাড়িতে থাকে না। সেদিন হুট করে এসে রফিকুলের ছেলেকে মারপিট করে। আবার পরদিন তার ভাইয়ের ছেলের পেটে সিনেমার ভিলেনের মতো ধারালো ছুড়ি মেরেছে। ছেলেটার ভাগ্য ভালো যে শরীরে মোটা কাপড় ছিল। না হলে সেখানেই মারা যেত। তবে মঞ্জেল ছেলে একদম বদমেজাজী। তাদের অনেক জনবল থাকায় অহংকারের শেষ নেই। তারা ভাবে দু’একজনকে মেরে ফেললেও তাদের কিছু হবে না।
এবিষয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই পূর্বে জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছি। তা আইনি প্রক্রিয়ায় নিঃস্পত্তি হবে। কিন্তু তারা আমার ছেলেকে প্রথমে হত্যার চেষ্টা করে পরে আমার ভাতিজাকে হাঁসের খামারে একা পেয়ে হত্যার চেষ্টা করে। তারা যেভাবে হিংস্র হয়ে উঠেছে এলাকার মানুষ না থাকলে তাদের দুজনকে হত্যা করে ফেলত। এখন আমি মামলা না তুললে সবাইকে মেরে ফেলার হুমকিও দিচ্ছে। তাদের কাছে থেকে আমি ও আমার পরিবার এখন নিরাপদ নয়। তাই তাদের দ্রুতে গ্রেফতার করে শাস্তি দেওয়া হোক। আমরা যেন আমাদের পরিবার নিয়ে শান্তিতে জিবন যাপন করতে পারি।
একই এলাকার মজিবর রহমানের ছেলে মোঃ গোলাম রব্বানী বলেন, ১৬ তারিখের ঘটনার পর আনছার আলী, আনাকুল ও মন্জেল তাদের হত্যার জন্য ছুটাছুটি করে। আমি নিজে তাদের একাধিক বার পা সহ ধরছি। কিন্তু পরের দিন তারা রওশনকে একা পেয়ে হত্যার জন্য পেটে ছুরি মারে। আমি তাদের উপযুক্ত শাস্তি চাই, যেন এরকম ঘটনা আর তার ঘটাতে না পারে।
এবিষয়ে মঞ্জেল, আনাকুল ও ছলে মামুদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করলে তাদের বাড়িতে পাওয়া যায়নি।
সদর থানার অফিসার ইনচার্জ এম আর সাঈদ জানায়, রওশন আলীকে হত্যা চেষ্টায় থানায় একটি মামলা রুজু করা হয় এবং দ্রুতে আসামিদের গ্রেফতার করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
/এমএ