হাসান আহেমদ, নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন চৌধুরী বাড়ি বাস ট্যান্ড সংলগ্ন মসজিদ ও বাজার কমিটি নিয়ে এলাকাবাসীর জনমনে ক্ষোভ। স্হানীয়রা দূর্ণীতিবাজ কমিটির কব্জা থেকে পরিত্রান চায়। তা না হলে যে কোন সময় ঘটতে পারে অপ্রিতিকর ঘটনা। এমনটাই আভাস পাওয়া যায়।
জানা যায় যে, দীর্ঘ বছরের পুরনো এই চৌধুরী বাড়ী বাসট্যান্ড। এই বাসট্যান্ড কে ঘিরে মুসল্লিদের জন্য নির্মিত হয় চৌধুরী বাড়ি বাস ট্যান্ড জামে মসজিদ। মসজিদের উন্নয়নে ও তত্বাবধানের জন্য গঠন করা হয় পরিচালনা কমিটি। অপরদিকে রাস্তার চারপাশে গড়ে উঠে জনসাধারণের সুবিধার জন্য দোকান পাঠ। এ সকল দোকানের ক্ষুদ্র ব্যবসায়িদের দেখ ভালোর জন্য গঠন করা হয় চৌধুরী বাড়ি ব্যবসায়ী এসোসিয়েশন।
অনিয়ম ও দূর্ণীতির প্রশ্ন উঠেছে এখন মসজিদ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কমিটির নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে।
অনিয়মতান্ত্রিক কমিটি গঠনের চেষ্টা এবং মসজিদ ও সমিতির অর্থ লুটপাটের। আর এ বিষয়ে কেউ কোন বাঁধা বা প্রতিবাদ করতে চাইলেই তাকে দেয়া হয় হুমকি।
গোপন সূত্রে জানা যায় যে, বর্তমান সরকার দলীয় এক প্রভাবশালী নেতা তার নিয়ন্ত্রণে এ কমিটি গুলো কব্জা করে রেখেছে। নামে মাত্র কমিটি গঠন করা হলেও তাদের কার্যক্রম নিস্ক্রিয়। প্রভাবশালী সেই নেতার হুকুমেই কমিটির নেতৃবৃন্দের চলতে হয়। আর যদি না চলে তবেই নেতার রোষানলের শিকারে পড়তে হয় কমিটির লোকদের। মসজিদের লক্ষ লক্ষ টাকা উত্তোলন হলেও সে টাকার হিসাব মসজিদ কমিটির নেতৃবৃন্দ ও মুসল্লীদের কারো জানা নেই। অপর দিকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসিক চাঁদা ছাড়াও সময় অসময়ে বিভিন্ন তাল বাহানায় হাতিয়ে নিয়ে যাচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা নামধারী সেই প্রভাবশালী নেতা।
গত কয়েক মাস পূর্বে চৌধুরী বাড়ি দোকানদারদের পক্ষে অনির্বাচিত কমিটি পরিহার করে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচনের দাবি করে ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিল এর বরাবরে একটি লিখিত দাবী জানান দোকানদার ব্যবসায়ীরা। এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায় মসজিদ কমিটির সভাপতি মোঃ মুন্না ও অর্থ সম্পাদক মোঃ শামিম মসজিদের অনিয়মের কাজে বাধা দিয়েও কোন কাজ না হওয়ায় তারা কর্তব্য পালনে বিরত আছেন বলে জানা যায়। তবে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ জসিম বলেন সভাপতি ও অর্থ সম্পাদক দুজনই নিজ ব্যস্ততার কারণে সময় দিতে পারেনা। তাই মসজিদের উত্তোলিত টাকা মহসীন ভুঁইয়ার মাধমে নতুন ভবন নির্মান কাজে যথাযথ ভাবে ব্যয় হচ্ছে এবং আয় ব্যয়ের হিসাবও আমাদের কাছে রয়েছে। এদিকে অর্থ সম্পাদক শামীম জানান, আমি নাম মাত্র কোষাধ্যক্ষ এখন পর্যন্ত মসজিদের উত্তোলিত একটি টাকাও আমার কাছে আসেনি বা কমিটির কেউ আমাকে কখনও কিছু বলেনি যত টাকাই আসে সব দোকান কমিটির সভপতি মহসীন ভুঁইয়া নিয়ে যায় তাই আমি এই অনিয়মের কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছি।
সভাপতি মুন্নার সাথে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
এ দিকে চৌধুরী বাড়ি ব্যবসায়ী এসোসিয়েশন সমিতির দীর্ঘ ১২ বছর যাবৎ সভাপতির আসনে ক্ষমতার দাপটে বসে আছেন মহসিন ভূইয়া। আর সাধারণ সম্পাদকের দ্বায়িত্বে কাজী মহসিন। তবে কাজী মহসিনের অগোচরেই মহসিন ভূইয়া তার একক প্রভাব বিস্তার করে চলছে বলে এমনটি অভিযোগ মহসিন ভূইয়া’র বিরুদ্ধে। এ ছাড়াও সম্প্রতি সমিতির নতুন কমিটি নিয়ে চলছে কানামাছি খেলা। চলমান কমিটির নেতৃবৃন্দের অগোচরে মহসিন ভূইয়া তার মদদপুষ্ট লোকজন নিয়ে নতুন কমিটি গঠন করার চেষ্টা করে যাচ্ছে বলে অনেকেই এ অভিযোগের আঙুল তুলে ধরছেন মহসিন ভূইয়ার বিরুদ্ধে। অনেকের অভিযোগ মহসিন ভূইয়া নির্বাচনী পদক্ষেপ না নিয়ে নিরবে তার পক্ষে সমর্থন নিতে রাতের আঁধারে কমিটি প্রস্তুত করার নীল নকসা তৈরি করে দোকানদারদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভয়ভীতি দেখিয়ে স্বাক্ষর নিচ্ছে যদি কেউ স্বাক্ষর না দেয় তাহলে তাকে এখানে দোকানদারি করতে দিবেনা বলেও হুমকি দিয়ে চলছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দোকানদার জানান, আমরা দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় ধরে জিম্মি হয়ে আছি। দীর্ঘ দিন নির্বাচন না দিয়ে মহসীন ভুঁইয়া সভাপতি পদে রয়েছেন। মাসিক চাঁদাসহ সময় অসময়ে আমাদের জিম্মি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। আমরা নির্বাচনের কথা বললে আমাদের বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দেয় এবং সে তার নিজের মনগড়া তার মদদপুষ্ট লোকজন নিয়ে কমিটি করে এই কমিটিকে সমর্থন জানাতে আমাদের কাছ থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে স্বাক্ষর নিচ্ছে প্রতিবাদ করতে গেলে বলে আমাদের কথা মতো না চললে এই চৌধুরী বাড়ি এলাকায় ব্যবসা করতে পারবি না ।
আরেকজন দোকানদার বলেন, আমরা মহসীন ভুঁইয়ার অত্যাচারে অতিষ্ঠ। আমরা এই চৌধুরী বাড়ি ব্যবসায়ী এসোসিয়েশনের নির্বাচন চাই এবং তার অত্যাচারের হাত থেকে মুক্তি চাই। এই দুষ্টপ্রকৃতির মহসীন ভুঁইয়ার হাত থেকে রক্ষা পেতে ও নির্বাচনের ব্যবস্থা করে দিতে আমরা কিছুদিন পূর্বে আমাদের ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লার কাছেও ৫০ জনের স্বাক্ষরিত একটি আবেদন করি কিন্তু এখনও এর কোন প্রতিকার পাইনি। আমরা কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লার সুনজর কামনা করছি। তিনি যেনো যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করেন নয়তো এই অত্যাচারির হাত থেকে রক্ষা পেতে যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ আশংকা হতে পারে।
স্থানীয় এলাকাবাসী মহসীন ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে এমনও অভিযোগ তুলে ধরেন যে, সরকারি খাল ভরাট করে দোকান পজিশন দেওয়ার কথা বলেও অনেক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ওই সকল ব্যবসায়ীরা এখনও দোকান বুজে না পাওয়ায় ভুক্তভোগীরা হতাশায় দিনযাপন করছে ।
মসজিদ ও দোকান কমিটির অনিয়মের বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে মহসিন ভূইয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি তার উত্তরে বলেন, আমার বিষয় আপনাদের কাছে কে অভিযোগ করলো আগে তার নাম বলেন আর আমার বিষয় জানার প্রয়োজন মনে করলে আমার অফিসে এসে আমার সাথে কথা বলুন।
চৌধুরী বাড়ি বাস ট্যান্ড বাসী এসব প্রবাবশালী জিম্মিদার কমিটির হাত থেকে মুক্তি চায় সেই সাথে জনবান্ধব নেতৃত্বদানকারী কমিটি চায় ।
মসজিদ ও দোকান কমিটির বিষয়ে নাসিক ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, মসজিদ কমিটি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির উভয়ের কমিটি নিয়ে অনিয়ম ও দূর্নীতির।