সাইফুর নিশাদ, মনোহরদী (নরসিংদী) প্রতিনিধি: কাপাসিয়ার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৪ ভাগের ৩ ভাগ ভূয়া ভোটার দিয়ে গভর্নিং বডির নির্বাচন অনুষ্ঠানের অভিযোগ উঠেছে। ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকার ৪ তলা ভবনের একেকটি শ্রেনী কক্ষে ২ থেকে ৬ জন শিক্ষার্থীর উপস্থিতি মিলেছে।
তবে মাদ্রাসা সুপার ও এডহক কমিটির সভাপতির দাবী,শিক্ষার্থীর সংখ্যা তাদের ২ শ’। শ্রেণীকক্ষে সাকুল্যে ছোট আকৃতির ২৪ জোড়া বেঞ্চে এতো শিক্ষার্থীর স্থান সংকুলান হয় কিভাবে তা নিয়ে রীতিমতো প্রশ্নের উদ্রেক করেছে।
কাপাসিয়ার ভিকারটেক ছাবেদীয়া দাখিল মাদ্রাসাটি একরাশ অনিয়ম দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারীতায় নিমজ্জিত। মাত্র বছর দুই আগে ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকায় এর একটি ৪ তলা ভবন নির্মিত হয়েছে। সরেজমিনে এর শ্রেনীকক্ষে মাত্র ২৪ জোড়া বেঞ্চে ৩০/৩৫ শিক্ষার্থীর পাঠদান চলতে দেখা গেছে।
এলাকাবাসীর দাবী এতে ৬০/৬৫জনের বেশী শিক্ষার্থী নেই। তথাপি খাতাপত্রে ২ শতাধিক শিক্ষার্থীর অস্তিত্ব সেখানে।অভিযোগ রয়েছে,এ শিক্ষার্থীর ৪ ভাগের ৩ ভাগই ভূয়া।এর মধ্যে আশেপাশের বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত শিক্ষার্থীও রয়েছে। আর সে অনুযায়ী ভূয়া অভিভাবকদের নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন চলছে।
এসব বিষয় নিয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার,উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও গভর্নিং বডির নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিত উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।এর মধ্যে কাপাসিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুস সালাম অভিযোগ প্রাপ্তি নিশ্চিত করে জানান, তদন্তের জন্য অভিযোগটি উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে কাপাসিয়া উপজেলা সমাজসেবা অফিসার রুহুল আমিনের মোবাইল ফোনে ১১ বার কল ও ম্যাসেজ পাঠিয়েও সাড়া মেলেনি। কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বক্তব্য নিতে তার সাথে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি। অভিযোগকারীদের দাবী,ভূয়া ভোটার তালিকা সংশোধন করে প্রকৃত অভিভাবকদের নিয়ে নির্বাচন দেয়া হোক।
তাদের অভিযোগের আঙ্গুল মাদ্রাসার এডহক কমিটির সভাপতি আব্দুল মোতালিবের দিকেও প্রতিষ্ঠানের সুপার তার আজ্ঞাবহ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির নির্বাচনে গত ১২ ফেব্রুয়ারী প্রার্থীতায় সভাপতির অনুমতি ব্যতিরেকে মনোনয়নপত্র বিক্রি নিষেধ বলে সাফ জানিয়ে দিতে দেখা গেছে মাদ্রাসা সুপার আব্দুস শহীদকে।সেদিন তার টেবিলের সামনে মনোনয়নপত্রের টাকা জমা রেখে ধর্না দিতে দেখা গেছে প্রার্থীতায় আগ্রহী অভিভাবক ভিকারটেক গ্রামের কামাল মিয়া,কুশদী গ্রামের সিরাজ উদ্দীন ও একই গ্রামের তাহমিনাকে।
সুপার জানালেন, সভাপতির অনুমতি ছাড়া মনোনয়নপত্র দেয়া যাবে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শ্রেনীকক্ষগুলো ঘুরে দেখা গেছে ১ম শ্রেনী থেকে অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত কোন শ্রেনীতেই ৫ জনের বেশী শিক্ষার্থী উপস্থিত নেই।দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেনীতে মাত্র ২ জন করে শিক্ষার্থী।তবে তৃতীয় শ্রেনীর হাজিরা খাতায় ২৬ শিক্ষার্থীর নাম দেখানো হয়।
এ ব্যাপারে মাদ্রাসা সুপার উপস্থিত এলাকাবাসীর সামনে,শ খানেক শিক্ষার্থী আছে বলে জানালেও পরে ২শ’ বলে দাবী করেন তিনি।ছোট ছোট ২৪ জোড়া বেঞ্চে এতো শিক্ষার্থী কিভাবে বসে জানতে চাইলে সবাই উপস্থিত হয় না বলে জানালেন তিনি। আনীত অভিযোগের ব্যাপারে এডহক কমিটির সভাপতি আব্দুল মোতালিবের দাবী,এ সব ঠিক নয়। মাদ্রাসায় ২ শ’ শিক্ষার্থী আছে। তাদের অনেকেই নিয়মিত আসে না ফলে অল্প বেঞ্চে পাঠদানে অসুবিধে হয় না।
এসএ