Site icon জনতার বার্তা | জনগনের পক্ষে, জনতার কথা বলে

প্রস্তুত শোলাকিয়া, থাকছে দুটি বিশেষ ট্রেন

কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া মাঠে এবারও ঈদুল ফিতরে দেশের সবচেয়ে বড় জামাত অনুষ্ঠিত হবে। তার জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

দূরের লোকজনদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য এবারও থাকছে ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা।

শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, “সুষ্ঠুভাবে জামাত অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি এরইমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।”

১৮২৮ সালে শোলাকিয়া মাঠে অনুষ্ঠিত জামাতের হিসাব অনুযায়ী এবারে হবে ঈদুল ফিতরের ১৯৭তম জামাত।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন এ মাঠে ঈদ জামাতে অংশ নিতে আসেন; এখানে একসঙ্গে নামাজ আদায় করেন তিন লাখের বেশি মানুষ।

জামাতের প্রস্তুতি ও নিরাপত্তার বিষয়গুলো দেখতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও র‌্যাবসহ সংশ্লিষ্টরা একাধিককার ঈদগাহ মাঠ পরিদর্শন করছেন। ঈদগাহ কমিটির কর্মকর্তারাও পরিশ্রম করছেন দিন-রাত।

ঈদের দিন সকাল ১০টায় শুরু হওয়া ঈদের জামাত পরিচালনা করবেন বাংলাদেশ ইসলাহুল মুসলেমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ।

রেওয়াজ অনুযায়ী জামাত শুরুর আগে বন্দুকের গুলির শব্দে নামাজের প্রস্তুতি নেওয়ার সংকেত দেওয়া হবে। বিকল্প ইমাম হিসেবে থাকবেন বড় বাজার মসজিদের খতিব মাওলানা শোয়াইব বিন আব্দুর রউফ।

ইতোমধ্যে মাঠে দাগ কাটা, বালু ফেলা, দেয়ালে রঙ করাসহ শোলাকিয়া ময়দানকে জামাতের উপযোগী করার কাজ শেষ হয়েছে। সংস্কার করা হয়েছে ওজুখানা ও শৌচাগার। এখন চলছে শোভাবর্ধনের কাজ।

এছাড়া নামাজিদের জন্য সুপেয় পানি ও মেডিকেল টিমের ব্যবস্থা রয়েছে। দূর-দূরান্তের নামাজিদের জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাসহ নানা আয়োজনও শেষ হয়েছে। বিপুল সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক ও কয়েকটি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক আবুল কালাম আজাদ বলেন, “দূর-দূরান্তের লোকজনের যাতায়াতের জন্য শোলাকিয়া স্পেশাল দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ট্রেন দুটি ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে নামাজিদের নিয়ে আসবে। আবার নামাজ শেষে ফিরে যাবে।”

এবার চার স্তরের কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে জামাত অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “লোকজন যেন নিরাপদে আবার ফিরে যেতে পারেন সেজন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

“জামাতে টুপি, মাস্ক ও জায়নামাজ ছাড়া কিছুই বহন করা যাবে না। মোবাইল ফোন ও ছাতা বাড়িতে রেখে আসতে হবে।”

জামাত নির্বিঘ্ন করতে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে বলে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ জানান।

তিনি বলেন, ২০১৬ সালের ৭ জুলাই ঈদুল ফিতরের নামাজ চলাকালীন শোলাকিয়া ঈদগাহের কাছে পুলিশের একটি নিরাপত্তা চৌকিতে জঙ্গিদের অতর্কিত হামলায় দুই পুলিশ সদস্য নিহত ও চার পুলিশ আহত হয়েছিল। ওই ঘটনা মাথায় রেখে এবার অন্যান্য বছরের চেয়ে দেড়গুণ বেশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

“নামাজের সময় পাঁচ প্লাটুন বিজিবি, বিপুল পুলিশ, র‌্যাব, আনসার সদস্যের সমন্বয়ে নিরাপত্তা বলয়ের পাশাপাশি মাঠে সাদা পোশাকে নজরদারি করবে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন।

এছাড়া মাঠসহ প্রবেশ পথগুলোতে থাকছে সিসি ক্যামেরা এবং ঈদগাহ পর্যবেক্ষণের জন্য ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার। আর আকাশে উড়বে পুলিশের চারটি ড্রোন ক্যামেরা।”

মাঠে শতাধিক র‌্যাব সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন বলে র‌্যাব ১৪-এর অধিনায়ক মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান জানিয়েছেন।

Exit mobile version