Site icon জনতার বার্তা | জনগনের পক্ষে, জনতার কথা বলে

পাহাড়ি ঢলে মে মাসের প্রথমার্ধে হাওরাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা

একদিকে তীব্র দাবদাহে পুড়ছে সারাদেশ। অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে এবছরের এপ্রিলের তাপমাত্রা অনেক বেশি। বৃষ্টিরও দেখা মিলছে না। এই পরিস্থিতির মধ্যেও মে মাসের প্রথমার্ধে সিলেট এবং পার্শ্ববর্তী হাওরাঞ্চল পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আবহাওয়া পূর্বাভাসের বিভিন্ন মডেল বিশ্লেষণ করে এমনটাই জানিয়েছেন কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ।

গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ সিলেট বিভাগের ২০২২ সালের  ভয়াবহ বন্যার আগেও পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। তাঁর দেওয়া সেই পূর্বাভাস অনেকাংশেই সঠিক প্রমাণিত হয়। সেবার ভারী বৃষ্টিপাত, পাহাড়ি ঢল ও জলাবদ্ধতায় সিলেট বিভাগের বেশিরভাগ জায়গা তলিয়ে যায়। আকস্মিক বন্যায় চরম দুর্ভোগ ও ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হন সিলেটের মানুষ। যোগাযোগব্যবস্থা ও বিদ্যুতের বিপর্যয়ের কারণে একপর্যায়ে সুনামগঞ্জ জেলাও সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল। এরপর থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হলেই আতঙ্কে থাকেন ওই অঞ্চলের মানুষ। বন্যার ব্যাপারে তাদের মাঝে অজানা আশঙ্কা কাজ করে।

সম্ভাব্য পাহাড়ি ঢল প্রসঙ্গে মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, একটি শক্তিশালী পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাবে মে মাসের ৩ তারিখ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশের বেশিভাগ জেলার ওপর শক্তিশালী কালবৈশাখী ঝড়, তীব্র বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টি অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে। পশ্চিমা লঘুচাপটির প্রভাবে মে মাসের ৩ তারিখ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলো, এবং মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জি ও আসাম রাজ্যের করিমগঞ্জ জেলার উপরে ৩০০ থেকে ৪০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ইন্টিগ্রেটেড ফোরকাস্ট সিস্টেম মডেল অনুযায়ী এমন ধারণা করছি।

তিনি জানান, সম্ভাব্য এই বৃষ্টির পুরোটাই সিলেট বিভাগের বিভিন্ন নদ-নদীতে প্রবাহিত হয়ে সিলেট বিভাগের নিচু হাওর এলাকাগুলোকে প্লাবিত করবে। অন্যদিকে মে মাসের ৫ তারিখের পর থেকে পাহাড়ি ঢলের কারণে সিলেট বিভাগ ও কিশোরগঞ্জের জেলার হাওরাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। একই সময়ে চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে ১০০ থেকে ২০০ মিলিমিটার এবং বরিশাল, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের জেলাগুলোতে ৫০ থেকে ১০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। অপেক্ষাকৃত কম বৃষ্টি হতে পারে খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জেলাগুলোতে।

মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, পূর্বাভাসের উদ্দেশ্য হলো, মানুষ যেন দুর্যোগ সম্পর্কে আগে থেকে সচেতন হন। যেকোনো দুর্যোগ মোকাবেলার প্রথম ধাপ এটি। এরপর যদি পূর্বাভাস শতভাগ সঠিক না-ও হয়, তাতে কোনো ক্ষতি নেই। কিন্তু দুর্যোগের প্রস্তুতি না থাকলে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়। পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যা মোকাবেলা করতে হাওরবাসীর প্রস্তুত থাকা প্রয়োজন।

Exit mobile version