Site icon জনতার বার্তা | জনগনের পক্ষে, জনতার কথা বলে

বাবার স্বপ্ন মেয়ে পড়বে ইবির আইন বিভাগে

ইবি প্রতিনিধি: চোখে মুখে স্বপ্নের আভা। মেয়ের থেকে বাবার স্বপ্নই বেশি। অনেকের কাছে একটা আসন নিশ্চিত করাটাই স্বপ্নের চেয়ে বড়। সেই মুহূর্তে মেয়েকে পরীক্ষা কেন্দ্রে পাঠিয়ে ডায়না সত্বরে বাবার একমাত্র জিকির আইনে পড়ার মতো পজিশন হোক মেয়ের। বলছি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) কেন্দ্রে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা এক অভিভাবকের স্বপ্নের কথা। স্বপ্নের কথা শেয়ার করতে গিয়ে এক পর্যায়ে বলেন আইনে পড়ার স্বপ্ন আছে বলেই ইবিতে মেয়েকে নিয়ে আসছি।

শুক্রবার (৩ এপ্রিল) গুচ্ছভুক্ত ‘বি’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা মেয়ে শিক্ষার্থী শিকফার অভিভাবক কায়মনোবাক্যে ব্যক্ত করেন তাঁর লালিত স্বপ্নের কথা।

পরীক্ষার্থীর বাড়ি রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলায়। পরিবারের তৃতীয় সন্তান। এর আগেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃতকার্য হয়। কিন্তু বাবার স্বপ্ন মেয়ে ইবিতে আইন বিভাগে অধ্যায়ন করবে।

ওই অভিভাবক জানান, ৯৫ হাজার শিক্ষার্থীদের মধ্যে আইন বিভাগে ভর্তি হতে পারাটা ভাগ্যের ব্যাপার। সেই ভাগ্যটা আমার সন্তানের প্রতি আশীর্বাদ হিসেবে ধরা দিক এই প্রার্থনা করি। একজন সন্তানের প্রতি বাবার চেয়ে মা-ই দেখাশোনা করার সুযোগ বেশি পায়। এদিকে আমি একজন ব্যবসায়ী হওয়ায় দেখাশোনা করার তেমন সুযোগ থাকে না। রাজবাড়ী থেকে ইবি নিকটবর্তী বলে এখানে রাখার স্বপ্ন দেখি। বাকিটা সৃষ্টির্তায় ভালো জানে। আমার মেয়েটা মেধাবী বলে এতটুকু প্রত্যাশা রাখি। ওদের বয়স হয়ে গেছে। স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব তাদের নিজের। আমরা শুধু সাপোর্ট করে যেতে পারি।

এদিকে শিক্ষার্থী শিকফা বলেন, আমার চেয়ে আমার আব্বুর স্বপ্ন বেশি। বি ইউনিটে যেহেতু আইন সর্বোচ্চ টপ পজিশনে আছে। চাকরি লেভেলে চাহিদা বেশি। সুতরাং স্বপ্ন দেখি আইনে পড়ার। আব্বু আম্মুর আশীর্বাদে আইনে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাব বলে আশা করি।

শিক্ষার্থীরা কেন আইনে পড়তে ইচ্ছুক?
_আইন বিষয়ে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়ার অন্যতম কারণ সামাজিক সম্মান ও ভালো আয়ের সুযোগ। বর্তমান সময়ে আদালত ছাড়াও বিস্তর কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে আইন বিষয়ে স্নাতকদের। সরকারি-বেসরকারি বড় প্রতিষ্ঠান তো বটেই মাঝারি এমনকি ছোটখাটো প্রতিষ্ঠানগুলোও আইনি বিষয়গুলো দেখভাল করার জন্য লিগাল এডভাইজার নিয়োগ দেয়।

আইনজীবী হিসেবে সফল ক্যারিয়ার গড়ার সম্ভাবনা তো আছেই। এছাড়া সহকারী জজ ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে সরকারি চাকরির সুযোগ আছে। বিসিএসে পররাষ্ট্র, প্রশাসন, পুলিশ, কাস্টমস ইত্যাদি নন-টেকনিক্যাল ক্যাডার হওয়া যাবে। কমিশনড অফিসার পদমর্যাদায় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীতে স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জাজ অ্যাডভোকেট জেনারেল হিসেবে চাকরির সুযোগ রয়েছে। আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে সহকারী আইন সচিব হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার কথাও ভাবতে পারেন কেউ কেউ।

বিদেশী দূতাবাস, ব্যাংক ও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে ‘ল অফিসার’ হিসেবে কাজ করতে পারেন অনেকে। চাইলে কেউ দেশের বাইরেও এ বিষয়ে পড়াশোনা ও ক্যারিয়ার গড়তে পারেন।

প্রসঙ্গত, বেলা ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬টি একাডেমিক ভবনে মানবিক বি ইউনিটের পরীক্ষা শুরু হয়ে বেলা ১২ টা পর্যন্ত চলে। ইবি কেন্দ্রে ‘বি’ ইউনিটে পরীক্ষা দেওয়ার কথা রয়েছে ৭ হাজার ২৪৬ জন ভর্তিচ্ছুর।

এর আগে সকাল ১০টা থেকেই প্রচন্ড দাবদাহের মধ্যে ভর্তিচ্ছু পরিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্থান থেকে নির্ধারিত সময়ের আগেই পরীক্ষা কেন্দ্রে আসতে থাকে। কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও আশপাশের জেলার শিক্ষার্থীদের পছন্দের কেন্দ্র ছিল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্র।

পরীক্ষা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান-সহ প্রশাসনের সদস্যরা পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।

এসএ

Exit mobile version