জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক শিক্ষার্থী ও তার পারবারিক বন্ধুর সাথে অসদাচরণের অভিযোগে গত ১১ ডিসেম্বর (বুধবার) ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে রাজধানী পরিবহণের ৩৭টি বাস আটক করে তুলনামূলক সাহিত্য ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা। তবে বাস আটকাতে গিয়ে ফোন হারানোর মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন একই বিভাগের ৫১তম আবর্তনের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম।
উক্ত ঘটনার জেরে সেদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন সড়কে বাসগুলো আটকে রাখেন শিক্ষার্থীরা।
এরপর রাত ৯টায় প্রক্টর অফিসে পরিবহরন শ্রমিক সমিতির প্রতিনিধি ও শিক্ষার্থীদের আলোচনা সভায় শিক্ষার্থীরা সবগুলো বাস ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু এসময় শরিফুল ও একই বিভাগের ৫০তম আবর্তনের আল-আমিনসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী ‘গুগল পিক্সেল সেভেন’ মডেলের মোবাইল হারানোর মিথ্যা অভিযোগ তুলে ৪২ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।
ফোন হারানোর বিষয়ে জানতে চাইলে শরিফুল বলেন, “প্রথম অবস্থায় ভেবেছিলাম আমার মোবাইলটা হারিয়েছে কিন্তু পরবর্তীতে আমরা মোবাইলটা খুঁজে পাই। এরপর সাথে সাথেই আমরা প্রক্টর স্যারকে জানিয়েছি।”
তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রক্টর অফিসের সভায় শরিফুল ‘গুগল পিক্সেল সেভেন’ মোবাইল ফোন হারানোর দাবি করলেও পরবর্তীতে ‘ইনফিনিক্স’ মোবাইল ফিরে পান। মোবাইল ফোন পালটে যাওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
এই ঘটনায় তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউট ছাত্রসংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আল আমিন মিয়া ও অর্থ সম্পাদক শেখ নাজমুস সাকিবের বিরুদ্ধে রাজধানী বাস আটকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বিভাগের ছাত্র সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আল আমিন মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি বাস আটকানোর সময় উপস্থিত থাকলেও কোনো অর্থ দাবি করিনি। বাস আটকে আমি প্রক্টর অফিসের সভায় ছিলাম। সেখানে জানতে পারি শরিফুলের ফোনটি বাসে হারিয়ে গেছে তখন বিষয়টি প্রক্টর স্যারকে জানাই। এরপর রাত ১১টার দিকে শরিফুল জানায় ফোনটি পাওয়া গেছে। তৎক্ষণাৎ প্রক্টর স্যারকে অবহিত করি। টাকা দাবি করছি প্রমাণ করতে পারলে আমি উপযুক্ত শাস্তি মাথা পেতে নিব।”
ছাত্র সংসদের অর্থ সম্পাদক শেখ নাজমুস সাকিব বলেন, “আমি ঘটনাটি ডিপার্টমেন্টের একটি গ্রুপের মাধ্যমে জেনে ১৫ মিনিট পর প্রক্টর অফিসের সভায় যাই। তখন জানতে পারি শরিফুলের ফোন হারানো গেছে, কিন্তু আমি কোনো টাকা দাবি করিনি। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, শেখ নাজমুস সাকিব ১৫ জুলাই রাতে ভিসির বাসভবনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা, চাঁদাবাজি, মাদক সেবন ও বিক্রি প্রভৃতি ঘটনায় আল বেরুনী হল থেকে অবাঞ্চিত ঘোষিত হয়েছিলেন।
এছাড়া মো. আল আমিন মিয়াও নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের জাবি শাখার কর্মী ছিলেন।
মোঃ আরিফ হোসেন/এমএ