ববি প্রতিনিধি: রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে আন্দোলন দমন করতে ও শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখাতে সাধারণ ডায়েরি ( জিডি) করেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ সোমবার (২৮ এপ্রিল) সহকারী রেজিস্ট্রার (নিরাপত্তা) কে. এম. সানোয়ার পারভেজ লিটন বাদী হয়ে ১০জন শিক্ষার্থীসহ অজ্ঞাতনামাদের নামে জিডি করেন ।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামের অশালীন ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা গতকাল রেজিস্ট্রারের কুশপুত্তলিকা পোড়ায় এবং রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে তালা দেন। উপাচার্যের চাপে পড়ে সহকারী রেজিস্ট্রার শিক্ষার্থীদের নামে মামলা করতে গেলে সুনির্দিষ্ট অপরাধ না থাকা মামলা না নেওয়া জিডি করেন তিনি।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, যৌক্তিক দাবি আদায়ের জন্য তারা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছিলেন। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের কণ্ঠরোধ করতে জিডি এবং মামলার ভয় দেখাচ্ছে।এর আগেও তিনি আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছেন, যা এখনোও বহাল রয়েছে।
জিডিতে লেখা হয়েছে, বিবাদীগণ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ছাত্র। তাহারা বিভিন্নভাবে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করা সহ বিশ্ববিদ্যালয়ে অরাজক পরিস্থিতি তৈরী করিয়া বেড়ায়। বিধানীগন দলে বলে চলে বিধায় তাহাদের ভয়ে সাধারন শিক্ষার্থীরা তটস্থ থাকে। বিবাদীগন তাহাদের শক্তি প্রদর্শনের জন্য বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে বিভিন্নভাবে বাধার সৃষ্টি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় বিতানীগন অজ্ঞাতনামা বিবাদী সহ ২৭-০৪-২০২৫ খ্রিঃ অনুমান ১৫:০০ ঘটিকা হইতে ১৪:৩০ ঘটিকা পর্যন্ত বন্দর থানাধীন ৭নং চরকাউয়া ইউনিয়ন, ৯নং ওয়ার্ড, কর্ণকারী সাকিনস্থ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সম্মুখে তাহাদের বিভিন্ন দাবী দাওয়া ও ফেষ্টুন নিয়া শ্লোগান দিতে থাকে এবং এক পর্যায়ে বিবাদীগন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এর কার্যালয় প্রশাসনিক ভবন-২ এর ৩য় তলায় যাইয়া গ্রান্ড মাইক সহকারে বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দিয়া প্রশাসনিক কর্মকান্ড ব্যাহত করার জন্য রেজিস্ট্রার এর কার্যালয়ে প্রবেশ করিয়া বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখাইয়া ও হুমকি দিয়া রুম থেকে কর্মকর্তা কর্মচারীদের বাহির করিয়া দিয়া রেজিস্ট্রারের রুম সহ অন্যান্য রুম তালাবদ্ধ করিতে বাধা করিয়া কলাক্সিবল গেটে তালা মারিয়া রাখে। যাহাতে প্রশাসনিক কর্মকান্ড ব্যাহত হয়। অনুমান ১৪:৩০ ঘটিকার সময়ে কেহ গেট খুলিলে তাহাদেরকে ক্যাম্পাসে থাকিতে নিবে না বলিয়া হুমকি দিয়া চলিয়া যায়। বিবাদীদের এহেন কর্মকান্ডে ক্যাম্পাসে আতঙ্ক বিরাজ করিতেছে।
এমতাবস্থায়, বিবাদীদের আচার আচরনে ধারনা করিতেছি যে, বিবাদীরা যে কোন সময় বড় কোন ঘটনা ঘটাইতে পারে বিধায় উপরোক্ত বিষয়টি আপনার থানায় সাধারন ডায়েরী করা একান্ত প্রয়োজন।
বন্ধর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন , “ আমাদের কাছে আপাতত ১০ জন শিক্ষার্থীর নামে সাধারণ ডায়েরি ( জিডি) করা হয়েছে”জিডিতে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা হলেন:১. রাকিন খান ( ইংরেজি বিভাগ)২. নাজমুল ঢালী ( গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ)৩. মোকাব্বেল শেখ ( লোকপ্রশাসন বিভাগ)৪. তরিক হোসেন ( আইন বিভাগ)৫. মিজানুর রহমান ( ইংরেজি বিভাগ)৬. এনামুল হক ( ইংরেজি বিভাগ)৭. এমডি শিহাব ( রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ)৮. তরিকুল ইসলাম ( ইংরেজি বিভাগ)৯. স্বপ্নীল অপূর্ব রকি ( কোষ্টাল স্টাডিজ বিভাগ)১০. রফিক ( রসায়ন বিভাগ)।
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সোনিয়া খান সনি বলেন,আমিও সামাজিক যোগাযোগ দেখছি, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনকে একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ করেননি।
সাইফুল/এমএ