নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাকিব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ’র অবহেলায় চরম সেশনজটের শিকার জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ। দীর্ঘ সাত মাসেও প্রকাশিত হয়নি বিভাগের স্নাতক চূড়ান্ত বর্ষের শিক্ষার্থীদের সপ্তম সেমিস্টারের ফলাফল। প্রকাশের দীর্ঘসূত্রিতার কারণে স্থবির হয়ে আছে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ও কর্মজীবন-সংক্রান্ত নানা কার্যক্রম।
জানা গেছে, আইন ও বিচার বিভাগের পঞ্চম ব্যাচের ৭ম সেমিস্টারের পরীক্ষা গত বছরের ২৩ মে শেষ হয়। পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নের পর পুনঃনিরীক্ষণের জন্য সেকেন্ড এক্সামিনারের কাছে পাঠানো হয়। সেসময় এই দায়িত্বে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. নাকিব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। গত বছর জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের পট পরিবর্তনের পর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার উপাচার্য হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন তিনি। নিয়োগ পাওয়ার পর আর নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার নম্বরপত্র সংক্রান্ত কাজে মনোযোগ দেননি অধ্যাপক নাকিব মোহাম্মদ। ফলে শিক্ষার্থীদের ফলাফল তার দপ্তরেই আটকে যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক নাকিব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ তিরস্কারের সূরে বলেন, “খাতা আমি দেখিনি। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে খাতা দিয়ে দিচ্ছি।”
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও চতুর্থ বর্ষ পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ইরফান আজিজ বলেন, “দ্রুত ফলাফল দেয়ার বিষয়ে চেষ্টা করা হচ্ছে। আরও সপ্তাহখানেক বা তারচেয়ে বেশি কিছুদিন সময় লাগবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে কথা বলবো।”
এদিকে স্নাতক চূড়ান্ত বর্ষে থাকলেও সপ্তম সেমিস্টারের ফলাফল প্রকাশে বিলম্বের ফলে স্থগিত রয়েছে শিক্ষার্থীদের ভাইভা, গবেষণা প্রস্তাবনা উপস্থাপনসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম। ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, “৭ মাসের দেরি মানে ৭ মাসের চাকরি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আমরা আবেদন করতে পারছি না। এভাবে চলতে থাকলে জুডিশিয়ারি, বার কাউন্সিলসহ বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা থেকে আমরা বঞ্চিত হবো।”
এর আগেও আইন বিভাগের পঞ্চম সেমিস্টারের ফলাফল প্রকাশে একই ধরনের বিলম্ব হয়েছিল। তখনো দীর্ঘ আট মাস পর সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার নম্বরপত্র সংশোধন শেষে ফলাফল প্রকাশ করা হয়। শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিভাগীয় ও একাডেমিক সমন্বয়হীনতার ফলে বারবার এই সমস্যা হচ্ছে।
দ্রুতসময়ে সপ্তম ও অষ্টম সেমিস্টারের ফলাফল প্রকাশের দাবি জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হলে কঠোর কর্মসূচি নিতে বাধ্য হবেন তারা।
মো. সাইফুল ইসলাম/এমএ