মোঃ এ কে নোমান, নওগাঁ: আসন্ন পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার কথা বিবেচনা করে নওগাঁ জেলা প্রশাসন ও জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের উদ্যোগে ন্যায্যমূল্যে দুধ, ডিম ও গরুর মাংস বিক্রির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় নওগাঁ সদর উপজেলা চত্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইবনুল আবেদীন, নবাগত সহকারী কমিশনার (ভূমি), জেলা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তারা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। এ সময় জেলা প্রশাসক বলেন, “রমজান মাসে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের খাদ্যসামগ্রী ক্রয়ক্ষমতার কথা মাথায় রেখে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাতে তারা স্বল্প মূল্যে প্রয়োজনীয় প্রাণিজ আমিষ ও অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী সংগ্রহ করতে পারেন।”
এই বিশেষ উদ্যোগের আওতায় গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬২০ টাকা, চিনি প্রতি কেজি ১২৫ টাকা, মুড়ি প্রতি কেজি ৯২ টাকা, চিড়া প্রতি কেজি (ভাজা ৯০, কাঁচা ৬৮ টাকা), ছোলা প্রতি কেজি ১০০ টাকা, মসুর ডাল প্রতি কেজি ১০০ টাকা, সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৮০ টাকা এবং ডিম প্রতি হালি ৪০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। বিশেষভাবে, রমজান মাসজুড়ে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬২০ টাকায় সপ্তাহে দুই দিন—শুক্রবার ও মঙ্গলবার—বিক্রি করা হবে।
সুলভ মূল্যে খাদ্যসামগ্রী বিক্রির এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা জানান, বর্তমান বাজারমূল্যের তুলনায় কম দামে এসব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পাওয়ায় তাদের জন্য স্বস্তির বিষয় হবে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য এটি অত্যন্ত সহায়ক হবে বলে তারা মনে করেন।
নওগাঁ শহরের বাসিন্দা আব্দুল জলিল বলেন, “বর্তমান বাজারে গরুর মাংস ৭০০ টাকার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। সেখানে সরকার নির্ধারিত এই দোকানে ৬২০ টাকায় মাংস পাওয়া গেলে আমাদের জন্য অনেক সুবিধা হবে।” আরেক ক্রেতা সাবিনা খাতুন বলেন, “রমজানে আমাদের খরচ বেড়ে যায়, বিশেষ করে আমিষজাতীয় খাবারের দাম বেশি হয়। এই উদ্যোগের ফলে আমরা সহজে ন্যায্যমূল্যে এসব খাবার কিনতে পারব।”
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, রমজান মাসে বাজার মনিটরিং আরও জোরদার করা হবে, যাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি করতে না পারে। পাশাপাশি, এ ধরনের ন্যায্যমূল্যের দোকান পরিচালনা অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, শুধু নওগাঁ সদর উপজেলায় নয়, জেলার বিভিন্ন উপজেলায়ও পর্যায়ক্রমে এ ধরনের ন্যায্যমূল্যের বাজার চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তারা। এতে জেলার আরও বেশি মানুষ এ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এমন উদ্যোগ রমজান মাসে সাধারণ মানুষের জন্য বিশেষ সহায়ক হবে এবং বাজারে স্থিতিশীলতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
/এমএ