Site icon জনতার বার্তা | জনগনের পক্ষে, জনতার কথা বলে

নির্মাণাধীন জাহাজে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে সবজি বিক্রেতার ছেলের মৃ’ত্যু

নির্মাণাধীন জাহাজে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে সবজি বিক্রেতার ছেলের মৃ'ত্যু

হাসান আহমেদ প্রান্ত, নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের বন্দরের সোনাকান্দা হাটের পাশে শাহেনশাহ ডকইয়ার্ডে নির্মাণাধীন একটি জাহাজে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ১৪ বছরের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। নিহত কিশোর মুন্সিগঞ্জ জেলার রমজানবেগ গ্রামের বাসিন্দা শহীদের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) ভোরে শহীদ তার ছেলেকে নিয়ে সোনাকান্দা সাপ্তাহিক হাটে কাঁচা সবজি বিক্রি করতে আসেন। হাটের পাশেই ছিল শাহেনশাহ ডকইয়ার্ডের নির্মাণাধীন বিশাল এক জাহাজ। শিশুটির কৌতূহল জাগে জাহাজটি দেখার, তাই সে সেখানে যায়। একপর্যায়ে জাহাজের পাখায় হাত দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে সে কাঁপতে শুরু করে।

হাটে আসা তালেব আলী নামে এক ব্যবসায়ী জানান, “আমি প্রথমে ভেবেছিলাম ছেলেটি দুষ্টুমি করছে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই সে নিস্তেজ হয়ে পড়ে যায়। ছুটে গিয়ে দেখি, সে আর বেঁচে নেই।”

এই মর্মান্তিক ঘটনার পরপরই এক লম্বা ব্যক্তি, যাকে স্থানীয়রা শাহেনশাহ বলে চেনেন, তড়িঘড়ি করে শিশুটির নিথর দেহ নৌকায় তুলে দেন এবং তার শোকাহত বাবাকে দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয়রা বলছেন, নির্মাণাধীন জাহাজটি বৈদ্যুতিক তারের সংস্পর্শে এসে পুরো জাহাজেই বিদ্যুৎ ছড়িয়ে গিয়েছিল। এ বিষয়ে সাংবাদিকরা তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করলে ডকইয়ার্ডের কর্মীরা তাদের হুমকি দিয়ে চুপ করিয়ে দেয়।

শাহেনশাহর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “ছেলেটি মারা গেছে শুনেছি, তবে আমার ডকইয়ার্ডে নয়, নৌকায়।” তবে সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল—নৌকায় বিদ্যুৎ এলো কীভাবে? এর জবাবে তিনি নিরুত্তর থাকেন।

এদিকে, কোনো ময়নাতদন্ত ছাড়াই শিশুটির লাশ দ্রুত মুন্সিগঞ্জে পাঠিয়ে দেওয়ার ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে বন্দর থানার ওসি তারিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি বলেন, “আমি এখন একটি ডকইয়ার্ড ওয়ার্কশপে আছি,” বলে ফোন কেটে দেন।

এ ঘটনায় যথাযথ তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী।

/এমএ

Exit mobile version