সোমবার, আগস্ট ১৮, ২০২৫
spot_img

সরকারি গাড়ি দেহরক্ষী নিয়ে অন্য জেলার পার্কে ঘুরছেন ইউএনও

মো.হানিফ মেহমুদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ: সরকারি গাড়িতে করে পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে দেহরক্ষীসহ অন্য জেলার পার্কে ঘুরতে গেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত আনজুম অনন্যা। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে তিনি সপরিবারে রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার সাফিনা পার্কে ঘুরতে যান।

জানা যায়, বিকেল ৬টা ২০ মিনিটের দিকে ইউএনও পার্কের ভেতর থেকে বের হন। সেখান থেকে বের হয়ে লাল রঙয়ের সরকারি পাজেরো স্পোর্টস গাড়িতে চড়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হন তিনি। এসময় তার সাথে সন্তানসহ পরিবারের একাধিক সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সাফিনা পার্কের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন, ইউএনও নিশাত আনজুম অনন্যা পার্কের ভেতর প্রায় ঘন্টাখানেক অবস্থান করেছিলেন। একাধিক ভিডিও ও ছবিতে দেখা গেছে, পার্কের ভেতরে ও বাইরে সার্বক্ষনিক তার সঙ্গে দেহরক্ষী ছিল। সরকারি সুযোগ সুবিধা নিয়ে স্টেশনের বাইরে ঘুরতে যাওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন।

নিয়ম অনুযায়ী, ১৮০০ সিসি বা এর অধিক ক্ষমতা সম্পন্ন গাড়ী সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ব্যক্তিগত কাজের জন্য সরকারি গাড়ি ব্যবহার করা যাবে না। প্রয়োজনে ব্যবহার করতে চাইলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে এবং গাড়ির পেমেন্ট দিতে হবে। সরকারি যানবাহন (ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ১৯৮২ অনুযায়ী, ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে এবং গাড়ীর সামনের বাম্পারে “অন পেমেন্ট” লিখিত বোর্ড লাগাতে হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতা বলেন, সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে ব্যক্তিগত কাজে বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহার করাও বড় ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির পর্যায়ে পড়ে। এটি রাজস্ব ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি বর্তমান জ্বালানি ব্যয় সাশ্রয়ে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর সামিল। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

রাজশাহীর সাফিনা পার্কে ঘুরতে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত আনজুম অনন্যা। এবিষয়ে তিনি বলেন, আমার অধিক্ষেত্র রাজশাহী বিভাগ পর্যন্ত। রাজশাহীতে আমার বেশকিছু কাজ ও ভিজিট ছিল, তার সবকিছু কাভার করেছি। রাজশাহী বিভাগ পর্যন্ত যেহেতু আমার অধিক্ষেত্র, সেহেতু আমি গাড়ি নিয়ে যেতে পারি।

জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদ এবিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। মুঠোফোনে তিনি জানান, এ সমস্ত বিষয়ে আমাকে ফোন করবেন না, সেসব বিষয় কাজে লাগবে তা নিয়ে কথা বলবেন।

এবিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক যুগ্ম সচিব বলেন, দাপ্তরিক কাজ ছাড়া একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ক্ষেত্রে নিদিষ্ট উপজেলার বাইরে সরকারি গাড়ি বা অন্যান্য সুযোগ সুবিধা গ্রহনের কোন বিধান নেই। দাপ্তরিক কাজে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা থাকার কথা নয়। আর ব্যক্তিগত বা পারিবারিক ভ্রমণে সরকারি গাড়ি, জ্বালানি ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নেয়া অন্যায়৷ এবিষয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের আরও বেশি সর্তক হওয়া উচিত।

/এমএ

- Advertisement -spot_img

রাজনীতি

আবেদন করতে ব্যানারে ক্লিক করুন...spot_img

সর্বশেষ সব খবর