মো. এ কে নোমান, নওগাঁ: নওগাঁ সদর উপজেলার ভীমপুর গ্রামে র্যাব-৫ এর অভিযানে উদ্ধার হয়েছে একটি দুষ্প্রাপ্য ও মূল্যবান কালো পাথরের বিষ্ণু মূর্তি। অভিযানে প্রাচীন মূর্তি পাচার চক্রের একজন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। তবে একই চক্রের অন্যতম হোতা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে।
বুধবার (১৪ মে) রাতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাব-৫, সিপিসি-৩, জয়পুরহাট ক্যাম্পের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
র্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (১৩ মে) রাত ১০টার দিকে র্যাবের একটি বিশেষ দল অভিযান চালায়। অভিযানটি পরিচালিত হয় নওগাঁ সদর উপজেলার ভীমপুর গ্রামের একটি বাড়িতে। সেখান থেকে অভিনব কৌশলে প্লাস্টিকের বস্তায় লুকানো অবস্থায় উদ্ধার করা হয় কালো পাথরের একটি বিষ্ণু মূর্তি। একই সময় ওই বাড়ি থেকে পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য মো. শাহজালাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ওই গ্রামের মৃত লয়েজ উদ্দিনের ছেলে।
তবে অভিযানের পূর্ব মুহূর্তেই পালিয়ে যান পাচার চক্রের অন্যতম হোতা ও হাসাইগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি চকমহাদেব গ্রামের মৃত আব্দুল প্রামাণিক গোয়ালের ছেলে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাব আরও জানায়, গ্রেফতারকৃত শাহজালাল ও পলাতক ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম একটি সংঘবদ্ধ আন্তর্জাতিক মূর্তি পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। দীর্ঘদিন ধরে তারা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অবৈধভাবে প্রাচীন ও মূল্যবান কালো পাথরের মূর্তি সংগ্রহ করে সীমান্তপথে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার করতো। বিষয়টি র্যাবের গোয়েন্দা টিম নজরে আনে এবং গত কয়েকদিন ধরে তাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণে রাখে। অবশেষে নিশ্চিত তথ্যের ভিত্তিতে এই সফল অভিযান চালানো হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাহজালাল র্যাবকে জানান, ১১ মে তারিখে ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম তার হেফাজতে মূর্তিটি রাখে এবং সুযোগ বুঝে বিদেশে পাচারের পরিকল্পনা করে। তারা দুজনই দীর্ঘদিন ধরে এই ধরনের চোরাচালান কার্যক্রমে জড়িত বলে স্বীকার করেন।
র্যাব জানায়, পাচারকারী সিন্ডিকেটের অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত করতে এবং গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। উদ্ধারকৃত বিষ্ণু মূর্তিসহ গ্রেফতারকৃত আসামিকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নওগাঁ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
র্যাবের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, এই ধরনের কর্মকাণ্ড ‘বিশেষ ক্ষমতা আইন, ১৯৭৪’ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
/এমএ