রবিবার, আগস্ট ১৭, ২০২৫
spot_img

রূপপুর প্রকল্প বন্ধের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঈশ্বরদীতে বিক্ষোভ-মানববন্ধন

সিয়াম রহমান, ঈশ্বরদী প্রতিনিধি: ‎রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মরত এনপিসিবিএল-এর কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর দাবি আদায়ের নামে বিক্ষোভ-সমাবেশ করে প্রকল্প এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির প্রতিবাদে ঈশ্বরদীতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

‎বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকালে শহরের ফকিরের বটতলা এলাকা থেকে প্রেসক্লাব গলি পযর্ন্ত  ‘সচেতন নাগরিক সমাজ ঈশ্বরদী’ ব্যানারে এই কর্মসূচি পালিত হয়। এতে ঈশ্বরদী শিল্প ও বণিক সমিতি, রিকশা চালক সমবায় সমিতি, সাহিত্য-সংস্কৃতি পরিষদসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের হাজারো নারী-পুরুষ অংশ নেন।

‎মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ পরিচালনা করেন সচেতন নাগরিক সমাজ ও সাহিত্য-সংস্কৃতি পরিষদের আহ্বায়ক ওহিদুজ্জামান টিপু।

‎লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সচেতন নাগরিক সমাজের নেতা ও ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এস এম ফজলুর রহমান। তিনি বলেন, দাবি আদায়ের নামে যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হচ্ছে, তাতে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়টি অনিশ্চয়তায় পড়েছে। ঈশ্বরদীবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্নের প্রকল্পকে যারা বন্ধ করার ষড়যন্ত্র করছে, তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতেই আজ আমরা রাস্তায় নেমেছি।

‎তিনি আরও জানান, বর্তমানে প্রকল্পের ৯৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। চলতি মাসেই সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে এবং ডিসেম্বরে ‘স্টার্টআপ’ কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা। এই সময়ে প্রকল্প এলাকায় অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি একটি অশুভ সংকেত।

‎তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এনপিসিবিএলে প্রায় দুই হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হলেও বিরোধীদলের কেউ সুযোগ পায়নি। এই বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত ও জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

‎লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, কর্মীদের চাকরি সংক্রান্ত দাবি থাকতেই পারে, কিন্তু আন্দোলনের নামে যেভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয়েছে, তা পরিকল্পিত বলেই মনে হচ্ছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের পরও আন্দোলনের নামে এমন কাজ গ্রহণযোগ্য নয় এবং এটি বিশ্ব দরবারে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে।

‎ঈশ্বরদী শিল্প ও বণিক সমিতির সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন জনি বলেন, রূপপুর প্রকল্প ঘিরে ঈশ্বরদীতে আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন এসেছে। স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারিত হয়েছে এবং প্রায় ২৫ হাজার দেশীয় শ্রমিক এখানে কাজ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। এই প্রকল্প বন্ধ হলে ঈশ্বরদীর অর্থনীতি বিপর্যস্ত হবে এবং বিমানবন্দর চালুর উদ্যোগও বাধাগ্রস্ত হবে।

‎ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের সভাপতি আজিজুর রহমান শাহীন বলেন, রূপপুর প্রকল্প আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সরাসরি নজরদারিতে থাকে। সেখানে আন্দোলন-সমাবেশ নজিরবিহীন এবং এটি শুধু দায়িত্বজ্ঞানহীনই নয়, প্রকল্পের অগ্রগতি এবং লাইসেন্স প্রাপ্তির প্রক্রিয়াকেও হুমকিতে ফেলছে।

‎সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় নেতা আহসান হাবিব, ঈশ্বরদী শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি আশিকুর রহমান নান্নু, সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এস আলমগীর, নিউ এরা ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোস্তাক আহমেদ কিরণ, বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম নয়ন, ব্যবসায়ী আবু সাঈদ লিটন, ইমরুল কায়েস সুমন, শামসুজ্জোহা পিপপু, আমিনুল ইসলাম স্বপন, মনিরুজ্জামান টুটুল, নারী নেত্রী সাথী খাতুন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ইব্রাহিম হোসেন, আবুল কালাম আজাদ ও ওহিদুজ্জামান মিন্টু প্রমুখ।

/এমএ

- Advertisement -spot_img

রাজনীতি

আবেদন করতে ব্যানারে ক্লিক করুন...spot_img

সর্বশেষ সব খবর