মো:হানিফ মেহমুদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ: মধুমতি গ্রাহক ফোরামের সভাপতি শ্রী রমেশ চন্দ্র বলেন, আমরা ৩৫ হাজার গ্রাহক মধুমতি সমাজ উন্নয়ন সংস্থার মালিক মাসুদ রানার সাথে একাধিকবার বৈঠিক করেছি এবং সেসময় মাসুদ রানা ৫০ কোটি টাকা দিতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু এখন নতুন করে আবার ষড়যন্ত্র ও টালবাহানা শুরু করেছে। আমরা গত ২ বছর ধরে মানববন্ধন, সমাবেশসহ বিভিন্ন আন্দোলন করেছি। প্রয়োজনে আবারো কঠোর আন্দোলনের পাশাপাশি বাকি গ্রাহকরা মামলা করবে।
মধুমতি গ্রাহক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম মাওলা জানান, মাসুদ গং টাকা ফেরত না দিতে নানারকম টালবাহানা করছে। আমরা গ্রাহকদের শতকোটি টাকা ফেরত নিয়ে শঙ্কায় দিন যাপন করছি। স্থানীয় প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সকলের নিকট আবেদন, টাকা ফেরত ছাড়া যাতে কোন সীধান্ত না নেয়া হয়। কারন মাসুদ রানার লোকজন আমাদের পাশ বইসহ সকল ডকুমেন্ট নিয়ে নিলে পরবর্তীতে আমােদরকে ফেরত না দেয়াসহ নানারকম বিপদে ফেলতে পারে এই আশঙ্কায় আছি।
সদর উপজেলার কালিনগর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা নাইমুল হক বলেন, মধুমতি সমাজ উন্নয়ন সংস্থা জেলাজুড়ে ৪৬টি শাখায় অবৈধ ক্ষুদ্র ঋণের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। সাধারণ জনগণকে এক লাখ টাকা জমা রাখলে মাসে ১২০০ টাকা লাভ দেয়া হবে এবং জমাকৃত টাকা চাওয়া মাত্র ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনগণের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করে মধুমতি৷ এভাবে জেলার পাঁচ উপজেলায় ৩৫ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে ১০৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। আজকাল করে টাকা ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভিন্ন কৌশলে সময় পার করে এবং টাকা না দিতে মধুমতি সমাজ উন্নয়ন সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ রানা স্বেচ্ছায় অস্ত্রসহ আটকের নাটক করে৷
সদর উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের সূর্যনারায়নপুর গ্রামের স্নাতক পড়ুয়া লতিফা খাতুন বলেন, আমার কোন ভাই নাই। বাবার উপার্জনের ৬ লাখ টাকা মধুমতি এনজিও-তে জমা রেখেছিলাম। কিন্তু বাবা অসুস্থ হওয়ার পরেও এখন চিকিৎসা করার জন্য টাকা উত্তোলন করতে পারছি না। বারবার এনজিও অফিসে ঘুরেও দিব দিচ্ছি বলে না দেয়ার পায়তারা করছে। টাকার জন্য এখন অসহায় দিন যাপন করছি।
জেলা শহরের বিজয় নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী সানজিদা খাতুন জানান, জমি বিক্রি করে টাকা জমা রেখেছিলাম মধুমতি সমাজ উন্নয়ন সংস্থায়। সেখান থেকে মাসে মাসে টাকা তুলে বেতন দিতাম। কিন্তু কয়েকমাস থেকে টাকা আত্মসাত করে পালিয়েছে এর মালিক পক্ষের লোকজন। এখন কলেজের বেতন দিতে পারছি না। জনগণের টাকা নিয়ে যে সমস্ত সম্পদ তৈরি করেছে, তা বিক্রি করে আমাদের টাকা ফেরত দিতে হবে।
/এমএ