রবিবার, আগস্ট ৩, ২০২৫
spot_img

জাবিতে ‘ছাত্ররাজনীতির সংস্কার: প্রসঙ্গ ডাকসু, জাকসু, চাকসু, রাকসু’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত

জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) জহির রায়হান অডিটোরিয়ামে আজ (৬ জানুয়ারি) সোমবার বিকাল ৩টায় ‘ছাত্ররাজনীতির সংস্কার: প্রসঙ্গ ডাকসু, জাকসু, চাকসু, রাকসু’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত উক্ত আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আরিফ সোহেল, বাংলাদেশ গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, বাংলাদেশ ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি খায়রুল আহসানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল বলেন, “নিম্ন আয়ের একটি দেশে ছাত্ররাজনীতি অপরিহার্য। গণতন্ত্রের ভিতকে মজবুত করতে ছাত্ররাজনীতির বিকল্প নেই। ফ্যাসিস্টরা শিক্ষার্থীদেরকে ক্ষমতার ক্ষেত্রে বড় বাধা মনে করে। তাই ৯০’র পর থেকে ছাত্রসংসদ নির্বাচন বন্ধ করে দেয় এবং তখন থেকেই ছাত্রসংগঠনগুলো দলীয় নেতাদের ও মূল দলের লেজুড়বৃত্তি করা শুরু করে দেয়। তাই ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ না করে বরং লেজুড়বৃত্তি বন্ধ করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের কল্যাণে সর্বদা অবস্থান নেওয়ার স্বাধীনতা থাকতে হবে।”

ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্রআন্দোলন বাংলাদেশ’র অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি খায়রুল আহসান বলেন, “ছাত্ররাজনীতি হচ্ছে রাজনৈতিক সচেতনতা। ছাত্ররাজনীতি যারা চায় না তারা মূলত নতুন ফ্যাসিবাদী হয়ে উঠতে চায়। যারা বিপ্লব পরবর্তী সময়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ চেয়েছিল তারা মূলত ছাত্ররাজনীতির সোনালি অর্জন সম্পর্কে অবগত নন। তারা ছাত্রলীগের সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, গেস্টরুম ও র্যাগ কালচারের ভয়াবহতা এমন দাবি জানিয়েছিল।”

বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ’র সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, “ছাত্ররাজনীতি না থাকলে ২৪’র গণঅভ্যুত্থান হতো না। ছাত্ররাজনীতিকে দলীয় সংগঠনের কালো থাবামুক্ত রাখতে হবে। আজকের ছাত্ররাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আধিপত্য ও দখলদারিত্বমুক্ত ছাত্ররাজনীতিই পারে সুন্দর ছাত্ররাজনীতি বিনির্মাণ করতে। জাতি গঠনের সূচনা দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ থেকে শুরু হতে হবে।”

বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির’র প্রকাশনা সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ বলেন, “বাংলাদেশে ছাত্ররাজনীতির অবদান পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। বর্তমানে ছাত্ররাজনীতি তার পথ হারিয়ে ভুল পথে আঁচড়ে পড়েছে, যা সঠিক পথে তোলা খুবই কঠিন। বিগত সময়ে ছাত্রলীগের চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে ছাত্ররাজনীতির ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিরূপ ধারণা তৈরি হয়েছে। তাই ছাত্ররাজনীতিকে তার সঠিক মহিমায় ফিরিয়ে আনতে হলে সংশোধন ও পরিমার্জনের কোনো বিকল্প নেই। ছাত্ররাজনীতির কেন্দ্রগুলোকে জ্ঞান আহরণের কেন্দ্রে পরিণত করতে হবে এবং ক্যাম্পাসগুলোতে জাতীয় নির্বাচনের পূর্বেই ছাত্রসংসদ নির্বাচন দিতে হবে।”

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, “জাতীয় নির্বাচনের আগে অবশ্যই ছাত্রসংসদগুলো হতে হবে। যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দীর্ঘদিন টিকে থাকতে চায় তারাই ছাত্রসংসদ নির্বাচন দিতে ভয় পায়। একটি দল থাকলে অন্য একটি দল সেখানে অংশগ্রহণ করবে না এমন মানসিকতা পরিবর্তন করা জরুরি। দেশের ও জনগণের স্বার্থে দলীয় মতবিরোধ উপেক্ষা করে এগিয়ে আসতে হবে।”

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, “২৪’র গণঅভ্যুত্থান সকল দল, মত, পথ নির্বিশেষে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রচেষ্টায় হয়েছিল। বৈচিত্র্যের নামে বিভাজন সৃষ্টি হচ্ছে, এতে গণঅভ্যুত্থানের শক্তি দুর্বল হচ্ছে। রাজনৈতিক সংস্কারের সঙ্গে সঙ্গে মানব উন্নয়নে কাজ করতে হবে। এদেশে আমরা প্রশংসাকে পূজা এবং সমালোচনাকে কুৎসা মনে করি। ডিবেটের পরিবর্তে ডায়লগ করতে হবে। ২৪’র দু’হাজার শহিদের রক্তের ঋণ শোধ করার লক্ষ্যে জাকসু নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছি।”

আরিফ হোসেন/এমএ

- Advertisement -spot_img

রাজনীতি

আবেদন করতে ব্যানারে ক্লিক করুন...spot_img

সর্বশেষ সব খবর