সোমবার, আগস্ট ১১, ২০২৫
spot_img

এই যাবৎ সবচেয়ে বেশি জুলুমের শিকার হয়েছে ‘ইসলাম’- মামুনুল হক

ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) জুলাই পরবর্তী করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিস ইবি শাখা।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় এ সভার আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিসের আমির মাওলানা মো. মামুনুল হক বলেছেন, বিগত ১৬ বছর এই ফ্যাসিস্ট সরকার আওয়ামী লীগ যেভাবে জুলুম অত্যাচার করেছে তাদেরকে ক্ষমা করে দেয়া হলে আল্লাহ পাক তাদের ক্ষমা করে দিবে না। অসংখ্য মানুষ গুমের শিকার হয়েছে। সম্প্রতি আয়না ঘরের যে দৃশ্য মাননীয় উপদেষ্টা উন্মোচন করেছে সেই ঘরে আমরা আর ফিরে যেতে চাই না। 

এসময় তিনি বলেন,যারা রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠার নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের শুধু  জানমালের ক্ষয়ক্ষতিতে সীমাবদ্ধ রাখেনি, বরং চরিত্র হনন করার মতো ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। পশ্চিমা রাষ্ট্রে ঘোষণা দিয়ে যুদ্ধ করলে বা মানুষ মারলে তাদেরকে জঙ্গিবাদী বলা হয় না, কিন্তু ইসলাম নিয়ে কিছু বললেই জঙ্গিবাদ ট্যাং দিয়ে দেয় তারা। 

তরুণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, আমরা যেখানে যাচ্ছি সেখানে যুব সমাজ যেভাবে বাধঁভাঙ্গার জোয়ার দেখে আমি আশাবাদী। যুবকরা সব ধরনের সমাজ ব্যবস্থা দেখেছে কিন্তু ইসলামের সমাজ ব্যবস্থা দেখেনি। বিপুল উদ্দীপনার মাধ্যমে তারা ইসলামের সমাজ ব্যবস্থা দেখতে চান। বড় কোনো নেতারা যা পারিনি তা ছাত্র সমাজ করে দেখিয়েছে। এই ছাত্র সমাজকে সুসংগঠিত করতে পারলে আগামীর বাংলাদেশ সুন্দর হবে বলে মনে করি। এখানকার সংবিধান হবে আল কুরআন, আইন হবে আল্লাহর। 

জুলাই বিপ্লব নিয়ে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় ষড়যন্ত্র হলো বিভাজনের রাজনীতি করা। সকল শিক্ষার্থীরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এক হয়ে সেই ষড়যন্ত্রকে উৎখাত করে দিয়েছে এই ছাত্র সমাজ। জাতি প্রস্তুত পুরো দেশ ইসলামের সমাজ দেখতে। তবে এই যুব সমাজ এখন সুসংগঠিত না। বিভিন্ন ফারাক দেখতে পাচ্ছি।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে তিনি বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয়, এটি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আগাগোড়া পুরো জায়গায় ইসলামকে দেখতে চাই। যদি ইসলামকে ধারণ করতে না পারলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থকতা থাকবে না। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কপাল জুড়ে ইসলাম রয়েছে। যদি কাজ করতে না পারেন তাহলে নাম পাল্টায় ফেলেন। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেভাবে ইসলাম সম্পর্কে তেমন জ্ঞান রাখে না ঠিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যেও যদি এরকম অবস্থা হয় তাহলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হওয়ার স্বার্থকতা নাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবকদের প্রতি বিষয়গুলো নজর রাখতে আহ্বান জানান তিনি।

এসময় বাংলাদেশ খেলায়েত যুব মজলিসের যুগ্মমহাসচিব মৌলানা আতাউল্লাহ আমিন বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনেও বৈষম্য হয়ে থাকে, যেখানে আবু সাঈদ মুগ্ধের নাম যেভাবে উচ্চারিত হয় সেভাবে অন্যদের নাম উচ্চারণ হয় না। বৈষম্যমুক্ত সমাজ গড়তে মানব রচিত আমিন বা বন্দোবস্ত নয় বরং আল্লাহ প্রদত্ত রচিত বিধান বাস্তবায়ন করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন,ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় তার স্বকীয়তায় ফিরে আসবে এবং যে লক্ষ্য উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সেই উদ্দেশ্য আমরা বাস্তবায়ন করবো ইনশাআল্লাহ। এখানে সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থার সাথে ইসলামিক ধারায় ধীরে ধীরে সব পরিবর্তন হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন । ইসলামী শিক্ষা চলমান থাকবে। আমি কথা দিচ্ছি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কে তার মূলধারায় ফিরিয়ে নিয়ে আসবো। তাছাড়া ১৬ বছরের জনজাল এক দিনে পরিষ্কার করা সম্ভব না।

উল্লেখ্য, আমন্ত্রিত অতিথির মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম,  থিওলজি এ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আ. ব. ম. ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী, সুবক্তা আব্দুল হাই সাইফুল্লাহ, বাংলাদেশ খেলায়েত যুব মজলিসের যুগ্মমহাসচিব মৌলানা আতাউল্লাহ আমিন-সহ ক্যাম্পাসে অন্যান্য শিক্ষক ও ক্রিয়াশীল সংগঠনের ছাত্র নেতৃবৃন্দ।

মোজাহিদুল ইসলাম/এমএ

- Advertisement -spot_img

রাজনীতি

আবেদন করতে ব্যানারে ক্লিক করুন...spot_img

সর্বশেষ সব খবর