সোমবার, আগস্ট ১৮, ২০২৫
spot_img

নওগাঁর ধামইরহাটে ভীড় জমেছে কাপড়ের দোকান গুলোতে

জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ: মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। এই ঈদকে কেন্দ্র করে জমজমাট এখন নওগাঁর ধামইরহাটে ঈদ বাজার শুরু হয়েছে। পরিবার-পরিজনের জন্য নতুন জামা কাপড় কিনতে ছোট-বড় মার্কেট, বিভিন্ন বিপনি বিতানগুলোতে ভিড় করছেন সাধারণ মানুষ। পিছিয়ে নেই ফুটপাতের বেচাকেনাও। ক্রমেই বাড়ছে ক্রেতা সমাগম। রমজানের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বাজারে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেলেও কার্যত ২০ রোজার পর থেকে ফুটপাত থেকে শুরু করে বহুতল বিপনি-বিতানগুলোতে জমে উঠেছে কেনাবেচা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে কেনাকাটা।

এবার ছেলেদের চাহিদা অনুযায়ী পাঞ্জাবি-পাজামা, বিভিন্ন দেশি-বিদেশি ব্র্যান্ডের শার্ট, প্যান্ট, মেয়েদের জন্য থ্রি-পিস, ফ্রক, স্কার্ট ও শিশুদের শার্ট, প্যান্ট, গেঞ্জি, পাঞ্জাবি-পাজামাসহ নানা নজরকাড়া পোশাক পাওয়া যাচ্ছে বিপণি-বিতানগুলোতে।

এ বছর বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে বাজারে এসেছে মেয়েদের জন্য ‘আলিয়া কাট গাউন’, ‘মাসাকাল্লি’, ‘নায়রাকাট’, ‘কালামকারি’ ও ‘নবাবি’ নামের থ্রি-পিস।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, অন্য বছরগুলোর তুলনায় এবার বিক্রি বেশি। দেশের তৈরি পোশাকের চাহিদাই বেশি। তবে ভারতীয় সিনেমার জনপ্রিয় নায়ক-নায়িকাদের নামে দেশে তৈরি পোশাকের প্রতি তরুণ-তরুণীদের আকর্ষণ বেশি। এবার প্রতিটি পোশাকের মূল্য কিছুটা বেশি হলেও বিক্রি হচ্ছে ভালো।

সরেজমিনে শুক্রবার (৫ এপ্রিল) দেখা যায়, উপজেলার শাপলা মার্কেট, ওসমান গনি সরণি কমপ্লেক্স, মনসুর টাওয়ার, মদিনা মার্কেট, রহিম প্লাজাসহ বিভিন্ন বিপণিবিতানে জমে উঠেছে ঈদের বাজার।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কেনাবেচা চলছে। শিশু তরুণীদের জন্য ফ্রক সেট, গাউন, জিপসি, ফ্লোর টাচ, লাচা, অর্গান্ডি থ্রি-পিস, লেহেঙ্গা, চাইনিজ পার্টি ড্রেস, ইন্ডিয়ান অরগানজা জামা বিক্রি হচ্ছে দেদার। ছেলেরা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্যান্ট, শার্ট ও পাঞ্জাবি কিনছে। তবে স্কুল কলেজ পড়ুয়াদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে ‘পাঠান’ ও ‘বাহুবলী-২’ নামের পাঞ্জাবি। অপরদিকে আমাদের কাছে সিল্ক জাতীয় বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ১৫ শত টাকা পর্যন্ত। কেউ কেউ সুতি কাপড়ের পাজামা-পাঞ্জাবিও কিনছে। এগুলো আবার ১৫ শত থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। এদিকে ছোট্ট বাচ্চাদের ফ্রোক সেট ২৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং বড়দের লেহেঙ্গা ২৫শত থেকে ৩ হাজার এবং বিভিন্ন ধরনের বোরখা ৪৫০-১৫ শত টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছে বলে জানান দোকানিরা।

উপজেলার পৌরসভা এলাকার আমাইতাড়া বাজারে সোনার মদিনা, রনি বস্ত্রালয়, রাজু ক্লথ স্টোরসহ শাড়ীর দোকানগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতাদের ভিড়। এসব দোকানে বিভিন্ন ধরণের সিল্ক শাড়ি, সুতিকাতান, স্বর্ণকাতান, বেনারসী, হাফসিল্ক, জামদানি শাড়ির বিক্রি ভালো। ২ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব শাড়ি। নিম্ন আয়ের ক্রেতারা কিনছেন ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকায় প্রিন্ট ও টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি।

সোনার মদিনা বস্ত্রালয়ের স্বত্বাধিকারী মোঃ মাহবুব জামান “জনতার বার্তাকে” বলেন, ‘রোজার শুরুতে ক্রেতা কিছুটা কম হলেও ঈদের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে দোকানে ক্রেতাদের ভিড় ততই বাড়ছে। আমাদের দোকানে পোশাকের পাশাপাশি জুতা ও কসমেটিকস প্রসাধনী বিক্রি হলেও এখন পর্যন্ত পোশাকের বিক্রিই বেশি। এ বছর দাম বেশি হলেও পোশাকের মান ভালো হওয়ায় ক্রেতারা সন্তুষ্ট হচ্ছেন।’

এদিকে মুহাম্মদিয়া টেলার্স এর কাটিং মাস্টার মো. সানাউল ইসলাম জানান, ‘আমাদের এখানে মেয়েদের বিভিন্ন ধরনের থ্রি-পিসের পাশাপাশি, ছেলেদের পাজামা, পাঞ্জাবি ও শার্টের সিট কাপড়ের কালেকশন নিয়ে ছুটে আসছে ক্রেতারা। রেডিমেড কাপড়ের পাশাপাশি নিম্ন আয়ের মানুষের চাহিদা সিট কাপড়ে। তৈরি পোশাকের তুলনায় এবার সিট কাপড়ের দাম খুব একটা বাড়েনি। তাই রমজানের শুরু থেকেই সিট কাপড়ের চাহিদা বেশি ভালো। তাই দর্জিদেরও ব্যস্ততা বেশি। আগামী কয়েক দিনে আরও ভিড় বাড়বে বলে মনে হচ্ছে।’

গ্রাম থেকে আসা আব্দুল কাদের নামের এক ক্রেতার সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, ‘এবারে সকল জামা-কাপড়ের মূল্য তুলনামূলক একটু বেশি। ঈদের আনন্দকে আরও রঙ্গিন করে তুলতে পছন্দের জামাগুলো দরদাম করে কিনে নিয়েছে। রেডিমেড কাপড়ের পাশাপাশি, টেইলার্স থেকে তৈরি করা পোষাক নিয়েছি ।’

মোঃ এ কে নোমান/এস আই আর

- Advertisement -spot_img

রাজনীতি

আবেদন করতে ব্যানারে ক্লিক করুন...spot_img

সর্বশেষ সব খবর