জাবি প্রতিনিধি: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। ৬ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির স্বাক্ষরিত আহ্বায়ক কমিটিতে জহির উদ্দিন বাবরকে আহ্বায়ক এবং ওয়াসিম আহমেদ অনীককে সদস্য সচিব করে ১৭৭ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার (৮ই জানুয়ারি) প্রকাশিত কমিটির আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর যিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৯-২০১০ সেশনের (৩৯ ব্যাচ) রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী এবং সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ অনীক বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১০-২০১১ সেশনের (৪০ ব্যাচ) দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।
কমিটিতে যুগ্ম-আহ্বায়ক হিসেবে ৫৬ জনকে রাখা হয়েছে, যারা প্রত্যেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৫ ব্যাচ (২০১৫-১৬ সেশন) ও তদুর্ধ ব্যাচের শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬ ব্যাচ ও তার পরবর্তী ব্যাচগুলো থেকে সর্বোচ্চ ‘সদস্য পদ’ পেয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী মাহবুব রহমান মুরাদ যিনি জাবি ছাত্রদলের সভাপতি পদপ্রত্যাশী ছিলেন, তাকে ১১৯ সদস্য বিশিষ্ট সদস্য তালিকায় ১ নম্বরে রাখা হয়েছে। এছাড়াও ৪৬ ব্যাচের আরেক শিক্ষার্থী জাকিরুল ইসলাম যিনি জাবি ছাত্রদলের সভাপতি পদপ্রত্যাশী ছিলেন, তাকেও সদস্য তালিকায় ৫ নম্বরে রাখা হয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বশেষ ৫৩ ব্যাচের আগমন ঘটেছে এবং ৫৪ ব্যাচের ভর্তি পরীক্ষার আবেদন প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। সেখানে ৩৯ এবং ৪০ ব্যাচ থেকে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের ছাত্রত্ব থাকা নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র অসন্তোষ ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিক্ষুব্ধ এক ছাত্রদল নেতা বলেন, “২৪’র গণঅভ্যুত্থানের সংস্কারের চেতনাকে উপেক্ষা করে এই আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হয়েছে। ১-২ মাস পর ক্যাম্পাসে ৫৪ ব্যাচ আসতেছে সেখানে ৩৯ এবং ৪০ ব্যাচে থেকে কমিটি দেওয়ার ফলে শিক্ষার্থীদের মাঝে বড় একটা জেনারেশন গ্যাপ তৈরি হবে। এই কমিটির সদস্যরা দীর্ঘদিন ক্যাম্পাসের বাইরে থাকায় এবং ১৪-১৫ বছরের বয়সের পার্থক্যের ফলে তাদের কাছে শিক্ষার্থীরা মনের ভাব প্রকাশ করতে হীনম্মন্যতায় ভুগবে এবং কমিটিও শিক্ষার্থীদের সাইকোলজি বুঝতে ব্যর্থ হবে। ফলে এই সুযোগ অন্যান্য ছাত্রসংগঠন লুফে নিবে।”
পদপ্রত্যাশী ছাত্রদলের অপর এক শীর্ষ নেতা বলেন, “২০০৮ সালের আহ্বায়ক সামসুজ্জোহা পারভেজ এবং সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক জিয়াউর রহমানের কমিটি ৩১ ব্যাচ থেকে, ২০১১ সালে সভাপতি জাকিরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আবু সাইদ ভূঁইয়া ৩৩ ব্যাচ থেকে, ২০১৬ সালে সভাপতি সোহেল রানা ৩৭ ব্যাচ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম সৈকত ৩৮ ব্যাচ থেকে। সেই হিসেবে ২৪ সালে এসে কমিটি হওয়া উচিত ৪৫-৪৬ ব্যাচ থেকে। সেটা না হয়ে তবে কার স্বার্থে এবার ৩৯/৪০ থেকে কমিটি হলো? এই কমিটি ২৪’র সংস্কার চেতনার পরিপন্থি। এদের সাথে জেনারেশন গ্যাপের কারণে শিক্ষার্থীদের দূরত্ব সৃষ্টি হবে এবং সাংগঠনিকভাবে ছাত্রদল ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
মোঃ আরিফ হোসেন/এমএ