রবিবার, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৫
spot_img

ঠাকুরগাঁওয়ে ঝুপড়ি ঘরে বৃদ্ধ দম্পতির মানবেতর জীবনযাপন

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় স্থানীয়দের সামান্য কিছু সহযোগিতায় তির্নয় নদীর ধারে ছোট্ট একটি ঝুপড়ি ঘর তুলে ঝুপড়ি ঘরের সাথে ছোট্ট একটি পান দোকানে দু থেকে তিন শত টাকা আয় করে কোনোমতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ৬০/ ৬৫ বছরের অসহায় হতদরিদ্র বৃদ্ধ দম্পতি সখিনা খাতুন ও আমির উদ্দিন ।

জানা যায়, বৃদ্ধ দম্পতি সখিনা খাতুন ও আমির উদ্দিনের বাড়ি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া থানা ধীন আখানগর ইউনিয়নের মহেশপুর কালীবাড়ির গ্রামে। বৃদ্ধ আমির উদ্দিনের দুটি বিয়ে হলেও অভাবের তারনাই বৃদ্ধ কে ছেড়ে চলে যায় অনেক আগেই প্রথম স্ত্রী জাহেদা বেগম । পরবর্তীতে বিয়ে করেন সখিনা খাতুনকে।
অন্য দিকে প্রথম স্ত্রীর এক পুত্র সন্তান থাকলেও তেমন একটা খোঁজখবর রাখছেন না বলে জানান বৃদ্ধ আমির উদ্দিন ।

দ্বিতীয় স্ত্রী সখিনা খাতুনের কোন ছেলে মেয়ে না থাকায়। ও অন্য দিকে বৃদ্ধ আমির উদ্দিনের কোন জমি জায়গা না থাকার কারণে তির্নয় নদীর ধারে ছোট্ট একটি ঝুপড়ি ঘর তুলে থাকছেন এই হতদরিদ্র দম্পতিরা।

অশ্রুশিক্ত চোখে বৃদ্ধ দম্পতিরা জানান, তাদের দুজনের একজনেরও বয়স্ক ভাতা নেই। একাধিকবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বয়স্ক ভাতার নাম নিলেও কি কারনে ভাতা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন তা জানা নেই তাদের। স্থানীয়দের সামান্য কিছু সহযোগিতায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। অশ্রুশিক্ত চোখে বৃদ্ধ দম্পতিরা জানান, সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘর পেলেই কিছুটা হলেও ভালো থাকবেন তারা। তাই প্রধানমন্ত্রীসহ প্রশাসনের কাছে একটি সরকারি ঘরের জন্য আকুল আবেদন জানান বৃদ্ধ এই দুই দম্পতি।

এই বিষয়ে স্থানীয় জহির উদ্দিন বলেন, আমি এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন বাজারে যায়। ও বৃদ্ধ আমির চাচার দোকানে চা পান খায়, আমির চাচা এই নদীর ধারে বাড়ি করার প্রায় ২ বছর হয়। আমি যতটুকু জানি আমির চাচা বিয়ে করছেন ২ টা কিন্তু বড় স্ত্রী অভাবের তারনাই অনেকে চাচা কে রেখে বাপের বাড়িতে চলে গেছে। আমির চাচার প্রথম ঘরের একটি ছেলেও রয়েছে কিন্তু সেই ছেলের সাথে কোন যোগাযোগ নেই তার। আর ছোট বউকে নিয়ে কোন মত দিন যাপন করতেছে এই খানে। উনি খুব অসহায় আমরাই মাঝে মধ্যে সহযোগিতা করি সংসার চালানোর জন্য।

আরেক স্থানীয় নজরুল ইসলাম বলেন, আমির উদ্দিন চাচার কোন জমি জায়গা নেই এবং কি ভিটে বাড়িও নেই থাকবে কোথায় তাই এই নদীর ধারে কোন মতো ঝুপড়ি ঘর করে থাকতেছেন।
এছাড়াও তিনি আরো বলেন, আমির চাচা শারীরিক ভাবে অসুস্থ, তেমন কাজ কর্ম করতে পারে না, আর এই পান দোকানে বা কয় টা বিক্রি হয়। আসলে খাইয়ে না খাইয়ে পরে আছে আর কি।

এই বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল বাসেদ বলেন,আমির উদ্দিনের অভাবের সংসার তার কোন জায়গায় জমি নেই। আর জায়গায় জমি না থাকায় সে তির্নয় নদীর ধারে আশ্রয় নেন। তার দুটো বিয়ে বড় বউ অনেক আগেই অভাবের জন্য তার বাপের বাড়িতে চলে গেছে আর ছোট বউকে নিয়ে সেই খানে রয়েছে। যে দোকান পাট করে সেই দোকান দিয়ে চলতে অনেক দায় হয়ে যায়। সেই খানে আশ্রয় নেওয়ার পরে পানি খাওয়ার ট্রিবয়েল ছিলো না আমি সেটা দিছি। তবে সরকার যদি তাকে থাকার জন্য একটি আশ্রয় করে দেন তা হলে হয়তো একটু ভালো থাকতে পারবে।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে জানান।

মোস্তাফিজুর রহমান আকাশ/এস আই আর

- Advertisement -spot_img

রাজনীতি

আবেদন করতে ব্যানারে ক্লিক করুন...spot_img

সর্বশেষ সব খবর