নোবিপ্রবি প্রতিনিধি: সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহার ও প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ না করায় সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) শিক্ষক সমিতি।
বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি।
রবিবার (৩০ জুন) বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহ্বানে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন ও অবস্থান কর্মসূচিতে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. বিপ্লব মল্লিক। এই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন।
নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. বিপ্লব মল্লিক বলেন, “গত ১৩ই মার্চ ২০২৪ অর্থ মন্ত্রণালয়ের পেনশন স্কিম সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে বিবৃতি প্রদান, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, মানববন্ধন, প্রতীকী কর্মবিরতি, স্মারকলিপি প্রদান এবং অবস্থান কর্মসূচি মতো শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময়ে সরকারের তরফ থেকে কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় গত ২৫শে, ২৬শে ও ২৭শে জুন বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালিত হয় এবং আজ ৩০শে জুন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালিত হচ্ছে।”
তিনি আরো জানান, “আমাদের এই আন্দোলন উচ্চ শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের চক্রান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন। আমরা এখনও আশা করি সরকার অনতিবিলম্বে এই যৌক্তিক দাবি মেনে নেবেন যাতে আমরা ক্লাসে ফিরে যেতে পারি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ১লা জুলাই থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
সর্বাত্মক কর্মবিরতির অংশ হিসেবে নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. বিপ্লব মল্লিক ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান রিমন স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নিম্নরুপ নয়দফা কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দিয়েছে নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি।
১। নোবিপ্রবির সকল বিভাগের সকল ক্লাশ (অনলাইন ও অফলাইন) বন্ধ থাকবে।
২। সকল পরীক্ষা বর্জন করা হবে। সিটি, টার্ম ফাইনাল, প্রেজেন্টেশন, মৌখিক, ল্যাব পরীক্ষাসহ কোনো পরীক্ষাই অনুষ্ঠিত হবে না।
৩ । বিভাগীয় চেয়ারম্যানগণ বিভাগীয় অফিস, ক্লাশরুম, সেমিনার, কম্পিউটার ল্যাব, গবেষণাগার
বন্ধ রাখবেন। একাডেমিক কমিটির সভা, প্রশ্নপ্রত্র সমন্বয় সভাসহ কোনো সভা অনুষ্ঠিত হবে না।
৪। অনুষদের ডিনবৃন্দ ডিন অফিস, ভর্তি পরীক্ষাসহ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম বন্ধ রাখবেন। নবীনবরণ অনুষ্ঠানের কর্মসূচি গ্রহণ করা যাবে না। সিলেকশন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে না।
৫। ইনস্টিটিউটের পরিচালকবৃন্দ ইনস্টিটিউটের অফিস, ক্লাশ ও পরীক্ষা বন্ধ রাখবেন। শুক্রবার ও শনিবারের ক্লাশ-পরীক্ষা, সান্ধ্যকালীন কোর্সসমূহ বন্ধ থাকবে।
৬। ডিন অফিস, ইনস্টিটিউট, বিভাগ থেকে কোনো ধরনের সেমিনার, কনফারেন্স ও কর্মশালা আয়োজন করা থেকে বিরত থাকবেন।
৭। হলের প্রভোস্টগণ প্রভোস্ট অফিস বন্ধ রাখবেন।
৮। এ ছাড়াও নোবিপ্রবির শিক্ষকগণ সব ধরনের প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকবেন।
৯। আন্দোলন চলাকালে প্রতিদিন বেলা ১১:৩০ মিনিট থেকে ১২:৩০ মিনিট পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি চলমান থাকবে।
সাজিদ খান/এস আই আর