হাবিপ্রবি প্রতিনিধি: দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আব্বাসুজ্জামানের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম, অতিরিক্ত টাকা আদায়, সেচ্ছাচারিতা, বিদ্যালয়ে অবস্থান না করা, রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোসহ নানা অনিয়ম- দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে। তাঁর পদত্যাগের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২৭ শে আগষ্ট) দুপুর ১২ টায় হাবিপ্রবি স্কুল থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে বিক্ষোভ মিছিলটি শেষ হয়।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা বলেন, আব্বাসুজ্জামান স্যার কখনও অফিসেই থাকে না। তিনি সকাল ৭ টায় আসবে তারপর নিজের হাজিরা দিয়ে চলে যান। বিদ্যালয়ে খেলাধুলা করার কোনো প্রকার সুযোগ সুবিধা দেন না। কোনো প্রকার সংস্কৃতি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে না। শিক্ষা সফর, বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়না প্রায় সাত বছর। বিদ্যালয়ে কম্পিউটার ল্যাব থাকলেও এর কোনো সুযোগ- সুবিধা পান না শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয়ের কোনো সার্টিফিকেট উত্তোলন সহ প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র উঠাতে গেলে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি টাকা দাবী ও সকাল ৭ টায় গিয়ে সংগ্রহ কিংবা রাত দশটায় নিজ বাড়ি থেকে সংগ্রহ করার নির্দেশ দেন।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, আমাদের শিক্ষক সংকট থাকলেও স্যার শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে তিনি গণিত বিষয়ের শিক্ষককে ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ে ক্লাস নিতে পাঠান। তিনি ইংরেজি শিক্ষককে পাঠান বাংলা ক্লাস নেয়ার জন্য, শুধু তাই নয় রসায়ন শিক্ষক ক্লাসে এসে এক দিনে একটি অধ্যায় শেষ করে দিয়ে যায়।
তার এসব কর্মকান্ড সম্পর্কে বিদ্যালয়ের বাকি সহকারী শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানান, গত ৪৩ মাস তারা বেতন পায় না। প্রায় সাত বছর যাবৎ কোনো ভাতাও পায় না। শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া হয় না। নির্বাচিত হওয়ার পরও সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগে বাঁধা। এমপিও ভুক্তকরণে খামখেয়ালি করা। বেতন উচ্চতর স্কেল করণে ৮ বছর দেরি করা। অন্যদের দায়িত্ব না দিয়ে সকল কাজ নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী করা। কোনো
অর্থ কমিটি গঠন না করা। কোনো রশীদ না দিয়ে টাকা খরচ করা। নাস্তা না দিয়ে তার বিল করে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া। নিজের জন্য আলাদা বিল করা। অর্থ বরাদ্দ থাকার পরেও প্রভিডেন্ট ফান্ড গঠন না করে ওই টাকা আত্মসাত করা। অডিট টিমকে নিজের কব্জায় নেওয়া। কোনো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন না করা। নিয়মানুযায়ী কমিটি গঠন না করা। অবকাঠামোগত কোনো উন্নতি না করা সহ নানাবিধ অভিযোগ উঠে আসে তার নামে।
এছাড়াও সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রধান শিক্ষকদের একই সাথে সর্বোচ্চ ছুটি ৩ দিন হলেও উনি বিগত ২৭.০৮.২৪ থেকে ০২.০৮.২৪ ইং পর্যন্ত ম্যানেজিং কমিটি বরাবর ছুটির আবেদন করে সহকারি শিক্ষক মো. আজিজুল ইসলামের উপর সাধারণ দায়িত্ব ন্যাস্ত করে ছুটিতে চলে যান।
এবিষয়ে প্রধান শিক্ষকের ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য প্রধান শিক্ষক পদত্যাগ করার দাবিতে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় কমিটির সাথে যোগাযোগ করলে তারা ১ সপ্তাহ সময় চায় এবং এই সময়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কোনো সমাধান না পেলে তারা আরও বড় পরিসরে আন্দোলন করার হুঁশিয়ারি দেন।
কামরুল হাসান/এস আই আর