ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) শাহবাগে ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকদের উপর পুলিশের বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদ ও ন্যাক্করজনক হামলার ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার জবাবদিহিতা নিশ্চিতে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে বাংলাদেশ জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়া ইবি শাখা।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বেলা:১১ টায় থিওলজি এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদ ভবনের উত্তর গেট থেকে এ বিক্ষোভ মিছিলটি যাত্রা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে।
এসময় আল কুরআন ও ইসলামিক ইস্টডিজের সাধারন শিক্ষর্থী জাহিদ হাসান বলেন, অনেকে মনে করেন অন্তবর্তিকালিন সরকারের দূর্বলতার সুয়োগ নিয়ে এই আন্দোলন করা হচ্ছে বরং এ আন্দোলন গত ৫৪ বছর ধরে চলে এসেছে। কিন্তু তাদের কোনো অধিকার দেওয়া হয়নি। আমরা অবকাঠামোগত কোনো উন্নয়ন চাইনি আমরা শুধু চেয়েছিলাম শিক্ষকদের বেতন। সরকার সেই দাবি পুরোন করতেও ব্যর্থ হয়েছে।
সরকারকে উদ্দ্যেশ্য করে তিনি আরও বলেন, আপনি এদেশে হাজারো ছাত্র জনতার রক্তের ওপরের সরকার। এদেশের ছাত্রজনতা ও শিক্ষকের ওপর আপনি হাত দিতে পারেন না, আপনাদের সেই অধিকার নেই। এসময় তিনি সরকারকে শিক্ষকদের সাথে আলোচনার দাবিও জানান।
ইবি শাখা শিবিরের ছাত্র অধিকার সম্পাদক মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন- রাজপথে বড় বড় বক্তব্য দিয়ে আমরা ক্ষান্ত হয়ে যাই , কিন্তু নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে গিয়ে কথা বলার জায়গা থাকে না। আমরা শুধু রাজপথে বক্তব্য দিয়ে ক্ষান্ত হবো না। নীতি নির্ধারণী পর্যায়েও আমাদের প্রতিনিধিত্বশীল দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাব। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে এই বাংলার জমিনে এই উপমহাদেশে যখনই রক্তের প্রয়োজন হয়েছে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর প্রয়োজন হয়েছে, যখন ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর প্রয়োজন হয়েছে, এমনকি ২০২৪ ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিপক্ষেও দাঁড়াতে হয়েছে, সবাই ঘোষণা করেছিল মাদ্রাসা শিক্ষক-শিক্ষার্থী রাজপথে নামছে না, কারণ তারা জানে অন্যান্য সকলে রাজপথ থেকে সরানো গেলেও মাদ্রাসা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সরানো যাবে না। রাজপথে রক্ত দেয়ার সময় মাদ্রাসা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কথা মনে পরে কিন্তু অধিকারের সময় ন্যায্য অধিকার দেয়ার সময় মাদ্রাসা শিক্ষক শিক্ষার্থীদের উপর নেক্কার জনক হামলা করা হয়। ২৪ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে আমরা এরকম দুর্নীতি মানি না মানব না।
বাংলাদেশ জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়ার সাধারণ সম্পাদক বলেন – ‘এটি শুধুমাত্র বিগত সাতদিনের দাবি নয়। দশক ধরে রাষ্ট্রের কাছে এ দাবি করে আসছে । কিন্ত আমরা দেখেছি এই রাষ্ট্রে যেই সরকারই আসে সবাই ইনিয়ে-বিনিয়ে ইবতেদায়ী শিক্ষকদের প্রতি বৈষম্য করে এ দাবি মেনে নেয় না। তারা ইবতেদায়ী শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের মানুষই মনে করে না। ইবতেদায়ী শিক্ষকদের যে দাবি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর এখন মেনে না নেয় কিন্তু তারা দুঃসাহস কিভাবে দেখায় টিয়ার শেল গ্যাস নিক্ষেপ করে,লাঠি চার্জ করে? মাদ্রাসা শিক্ষকদের কি দুর্বল পেয়েছে ? যত দিন তাদের দাবি মেনে নেয়া না হয় ততদিন মাদ্রাসার কোনো শিক্ষক, শিক্ষার্থী ঘরে ফিরে যাবে না। ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণ হবে তারপর আমরা ঘরে ফিরে যাব।’
বাংলাদেশ জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়ার সভাপতি বলেন -‘ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করনের দাবি নিয়ে আন্দোলনে যাওয়া ব্যক্তিদের ওপর ফ্যাসিস্ট কায়দায় যে হামলা চালানো হয় তার তীব্র নিন্দা জানাই। এই আন্দলনেকে বাংলাদেশের আপামর জনতার দাবি উল্লেখ করে তিনি বলেন এই আন্দলন শুধু জামিয়তে তলাবা বা বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবিরের আন্দোলন নয় এটি আপামর তৌহিদি জনতার আন্দোলন। যারা দীর্ঘ ৪০ বছর যাবত বেতন পাননি তাদের দাবি নিয়ে আমরা মাঠে নেমেছি। তিনি আরও বলেন যতদিন না জাতিয়করণ করা হচ্ছে ততদিন আমরা ঘরে ফিরব না।’
বিক্ষোভ মিছিল শেষে পুলিশের বর্বরোচিত হামলার তিব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে সমাপ্তি ঘোষণা করে।
মোজাহিদুল ইসলাম/এমএ