মঙ্গলবার, এপ্রিল ৩০, ২০২৪
spot_img

বুয়েটে রাজনৈতিক কার্যক্রম চলবে: হাইকোর্ট

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে ২০১৯ সালে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পর ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। ওই বিজ্ঞপ্তি স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। ফলে বুয়েটে রাজনৈতিক কার্যক্রম চলতে আর বাধা নেই।

সোমবার বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। রুলে ওই বিজ্ঞপ্তি কেন অবৈধ ও বেআইনি হবে না তা জানতে চেয়েছেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব, বুয়েট উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।

তিনি জানান, বাংলাদেশ সংবিধানের ৩৭, ৩৮ ও ৩৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের নোটিশ দেওয়ার কোনো ভিত্তি নেই। সমাবেশ, রাজনৈতিক দল করার এবং বাক স্বাধীনতার অধিকার মৌলিক অধিকার হিসেবে দেওয়া আছে। বুয়েট অর্ডিন্যান্স,  ১৯৬১ অনুসারে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণের কথা বলা আছে। নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা নেই। তারপরেও ওই নোটিশকে সম্মান করে আসছিলো ছাত্রলীগ। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফূল দিতে গেলে বাধা দেওয়া হয়। এরপর রাজনীতি নিষিদ্ধের নোটিশ যখন আমাকে দেখালো আমি বললাম, এটা মৌলিক অধিকার ও বুয়েট অর্ডিন্যান্স পরিপন্থী। গতকাল রিট প্রস্তুত করে আজকে ফাইল করে শুনানি করেছি। আদালত রুল জারি করে বিজ্ঞপ্তিটা স্টে করেছেন। যার ফলে বুয়েটে রাজনৈতিক কার্যক্রমে আর কোনো বাধা থাকলো না।

আদালতে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন।

রিটটি করেন বুয়েটের ২১ ব্যাচের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম। তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। 

ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেওয়াকে কেন্দ্র করে ২০১৯ সালে আবরার ফাহাদ নামে এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তখন শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৯ সালের ১১ অক্টোবর একটি জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। বুয়েটের ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল রাজনৈতিক সংগঠন এবং এর কার্যক্রম কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে নিষিদ্ধ করা হলো। ’ এরপর থেকে বুয়েটে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ রয়েছে।

তবে বৃহস্পতিবার গভীররাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি, দপ্তর সম্পাদকসহ অনেকেই বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। পুরকৌশল বিভাগের ২১তম ব্যাচের ছাত্র ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম এ সমাগম ঘটান বলে অভিযোগ করে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন। 

এরপর শুক্রবার রাতে বুয়েটের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ফোরকান উদ্দিনের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৮ মার্চ মধ্যরাতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সংঘটিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে ১. বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ ব্যাচের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিমের (স্টুডেন্ট নম্বর ২১০৪১৪১) হলের সিট বাতিল করা হলো। ২. এছাড়া সার্বিক বিষয়ে তদন্তপূর্বক সুপারিশ প্রদান করার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং ৩. বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর টার্মসেমিস্টার ফাইনালসহ সকল অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চলমান থাকবে।

এদিকে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি চালু চেয়ে বিক্ষোভ করেছে ছাত্রলীগ। এর মধ্যে বুয়েট ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধে ২০১৯ সালের ১১ অক্টোবরের বিজ্ঞপ্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন।

- Advertisement -spot_img

রাজনীতি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আবেদন করতে ব্যানারে ক্লিক করুন...spot_img

সর্বশেষ সব খবর