সিয়াম রহমান, ঈশ্বরদী: পাবনার ঈশ্বরদীতে যৌতুকের টাকা না পাওয়ায় স্বামী হৃদয় হোসেন বিপুর নির্যাতনের শিকার হয়ে রিয়া খাতুন (২৪) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ দাফন করা হয়েছে।
নিহত রিয়া উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়নের হঠাৎ পাড়া গ্রামের মিজানুর রহমানের মেয়ে। অভিযুক্ত স্বামী বিপু একই গ্রামের মিনারুল ইসলামের ছেলে।
জানা গেছে, রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতে দাশুড়িয়ার হঠাৎ পাড়া গ্রামের ভাড়া বাসায় যৌতুকের দাবিতে রিয়াকে নির্মমভাবে মারধর করেন স্বামী বিপু। লাঠি দিয়ে আঘাতের পাশাপাশি শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টাও করা হয়। প্রতিবেশীরা টের পেয়ে দরজা ভেঙে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। দুই দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে মঙ্গলবার রিয়া মারা যান।
রিয়ার পরিবারের দাবি, প্রেমের সম্পর্ক থেকে চার বছর আগে রিয়া ও বিপুর বিয়ে হয়। তবে বিয়ের পর থেকেই বিপু একাধিকবার যৌতুকের টাকা দাবি করেছেন এবং নির্যাতন চালিয়েছেন। পেশায় ট্রাকচালক হলেও যৌতুকের টাকা দিয়ে তিনি জুয়া ও মাদকাসক্তির অভ্যাস চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
সম্প্রতি ট্রাক কেনার অজুহাতে রিয়ার বাবার বাড়ি থেকে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা আনতে বলেন বিপু। রিয়া এতে অসম্মতি জানালে শুরু হয় ভয়াবহ নির্যাতন। এ ঘটনায় বিপু ও তার পরিবারের সদস্যরা ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিপু প্রায়ই মাদকাসক্ত অবস্থায় রিয়াকে মারধর করতেন। ঘটনার দিনও একইভাবে নির্যাতনের শিকার হন রিয়া। বিষয়টি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক উল্লেখ করে তারা দ্রুত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।
রিয়ার বাবা মিজানুর রহমান বলেন, “যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় আমার মেয়েকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এর ন্যায়বিচার চাই।”
/এমএ