বুধবার (২৯ মে) তৃতীয় ধাপে কুমিল্লার চারটি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কুমিল্লা দেবিদ্বার উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থী অংশগ্রহণ করে। কুমিল্লা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের ছোট ভাই মো. মামুনুর রশীদ যিনি আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রৌশন আলী মাস্টারের স্ত্রী ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী শাহিদা আক্তার ও তার মেয়ে দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী খাদিজা বিনতে রৌশন।
এদিন রাতে বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ফলাফলে কুমিল্লা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের ছোট ভাই আনারস প্রতীকের প্রার্থী মো. মামুনুর রশীদ বিপুল ভোটে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন। উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মো. মামুনুর রশীদ ভোট পেয়েছেন ৯২৫২১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য শাহিদা আক্তার ঘোড়া প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৩৪৪৮০ ভোট।
মামুনুর রশীদের বড় ভাই আবুল কালাম আজাদ কুমিল্লা-৪ (দেবিদ্বার) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য এবং তার বাবা মো. নুরুল ইসলাম দেবিদ্বার উপজেলার বরকামতা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) টানা দুই মেয়াদের আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান। ভাই সংসদ সদস্য (এমপি), বাবা ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর এবার ছোট ভাইকে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে পেয়েছেন দেবিদ্বারবাসী।
নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ বলেন, ‘আমার বাবা দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করে আসছেন। তিনি একজন ইউপি চেয়ারম্যান। মানবসেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। পরে আমার বড় রাজনীতিতে এসে দেবিদ্বারবাসীর ভালোবাসা পেয়েছেন। প্রথমে উপজেলা চেয়ারম্যান পরে কুমিল্লা-৪ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে তাকে দেবিদ্বারবাসী নির্বাচিত করেছেন। এবার তারা আমাকে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করেছেন। আমাদের পরিবার দেবিদ্বারবাসীর কাছে কৃতজ্ঞ। আমি সকলের মতামত নিয়ে দেবিদ্বারকে স্মার্ট উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলব।’
এদিকে, বুধবার ভোট চলাকালীন দুপুরে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রৌশন আলী মাস্টারের স্ত্রী শাহিদা আক্তার ও তার মেয়ে খাদিজা বিনতে রৌশন ভোট বর্জন করেন। সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের ভাই মানুনুর রশিদের কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে ভোট কারচুপি, কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের ওপর হামলা করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া, ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে বাধাসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেন তারা।
এ বিষয়ে বিকেলে রৌশন আলী মাস্টার নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলন করে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, ‘ভোটের আগের দিন থেকেই আমাদের নেতাকর্মীদের বিভিন্নভাবে হামলা হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলেন। ভোটের দিন সকাল থেকে আমাদের এজেন্টদের বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের ভোটকেন্দ্র ঢুকতে দেয়নি। তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। তাছাড়া ভোটারদের চিহ্নিত করে ভোটকেন্দ্রে আসতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছেন। নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। কেন্দ্র দখল করে তারা জাল ভোট দিয়ে তারা ফলাফল তাদের পক্ষে নিয়ে গেছেন।’