জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ: নওগাঁর ধামইরহাটের আড়ানগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম ও চাঁদাবাজির অভিযোগে তাদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় ধামইরহাট-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কের উপজেলা ক্যান্টিন চত্বরে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে সহস্রাধিক ভুক্তভোগী পরিবার, সচেতন এলাকাবাসী এবং শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে আড়ানগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. শাহাজাহান আলী কমল ও বর্তমান চেয়ারম্যান মো. মোসাদ্দেকুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ উত্থাপন করা হয়। অভিযোগে বলা হয়, চেয়ারম্যানরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরী দেওয়ার নাম করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়া, মানবপাচারের মামলায় জড়ানোর ভয় দেখিয়ে এবং জমি-জমা সংক্রান্ত মামলার রায় প্রভাবিত করার নামে বিভিন্ন চাঁদা আদায় করেছেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। যারা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন, তাদেরকে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর হুমকিও দেয়া হয়েছে।
সেননগর গ্রামের আরিফ হোসেন অভিযোগ করেন, সাবেক চেয়ারম্যান শাহাজাহান আলী কমল তাকে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে সাড়ে ৯ লাখ টাকা নেন, কিন্তু চাকুরী না দিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। চকভবানী গ্রামের আবুল কালাম অভিযোগ করেন, তাকে মানবপাচারের মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়ে ১২ লাখ টাকা আদায় করেছেন। এ ছাড়া, রামনারায়ণপুর গ্রামের আবু তাহের অভিযোগ করেন, বর্তমান চেয়ারম্যান মো. মোসাদ্দেকুর রহমান জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ৩৫ লাখ টাকা নিয়েছেন। পলাশবাড়ী গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম জানান, বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটিতে পদ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে লক্ষাধিক টাকা নিয়েও তাকে কোনো পদ দেওয়া হয়নি।
ভুক্তভোগীরা আরও অভিযোগ করেন, বর্তমান চেয়ারম্যান মোসাদ্দেকুর রহমান একজন মাদকাসক্ত এবং তিনি ইউনিয়ন পরিষদের অফিসে বসেই মাদক সেবন করেন। সাবেক চেয়ারম্যান মো. শাহাজাহান আলী কমল ৫ আগস্টের পর থেকে পলাতক রয়েছেন, যার ফলে পুরো ইউনিয়নের মানুষ তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ।
অন্যদিকে, চেয়ারম্যান মো. মোসাদ্দেকুর রহমান মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি কারো থেকে কোনো অর্থ গ্রহণ করেননি। প্রমাণ দিতে পারলে তিনি সেই অর্থ ফেরত দেবেন। সাবেক চেয়ারম্যান মো. শাহাজাহান আলী কমলও তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলোকে অযৌক্তিক এবং মিথ্যা বলে দাবি করেছেন। তবে, এত মানুষের মানববন্ধনের বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট জবাব দেননি।
সচেতন এলাকাবাসী এবং ভুক্তভোগী পরিবার সরকারের কাছে দুই চেয়ারম্যানের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
মো: এ কে নোমান/এস আই আর