গুরুদাসপুর প্রতিনিধি: গুরুদাসপুরের রোজী মোজাম্মেল মহিলা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা হলেন নাটোর-৪ আসনের বিএনপির প্রয়াত সাবেক সংসদ সদস্য মোজাম্মেল হক। কলেজটি গুরুদাসপুর পৌর সদরে অবস্থিত। ১৯৯৪ সালে নিজ সম্পত্তির ওপর কলেজটি নির্মান করেন তিনি। স্ত্রীর নামের সাথে মিল রেখে কলেজটির নামকরণ করা হয় ‘‘রোজী মোজাম্মেল মহিলা কলেজ’’।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে কলেজটি সঠিকভাবেই পরিচালিত হয়ে আসছিল। এরপর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর সমর্থনে ২০০১ সালে নাটোর-৪ আসনের এমপি হন মোজাম্মেল হক। নাটোর-৪ আসনের মাটি ও মানুষের নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ২০০৬ সাল পর্যন্ত। সবশেষ ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে শুরু হয় বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি। সরকার দলীয় ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে কলেজটি নিয়ন্ত্রনে নেয় আওয়ামীলীগ নেতারা। কলেজে শুরু হয় রাজনীতি। তার পর থেকে নিজেদের প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করতে পারেন নি সাবেক এমপি মোজ্জাম্মেল হকের পরিবার পরিজন। এরপর ২০২৩ সালে মোজাম্মেল হক মারা গেলে প্রতিষ্ঠানটি আরোও সংকটে পড়ে। কলেজে শুরু হয় নানারকম দুর্নীতি। রাজনৈতিক কোন্দলের কারনে শিক্ষার্থী কমতে থাকে কলেজে। এরপর দ¦›দ্ব শুরু হয় অধ্যক্ষ নিয়েও। অনেক চেষ্টার পরেও নিজেদের প্রতিষ্ঠানে যেতে পারেনি মোজাম্মেল হকের জ্যোষ্ঠ পুত্র ব্যারিস্টার আবু হেনা মোস্তফা কামাল রঞ্জু।
সবশেষ ৫ আগস্ট শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দলোনের গণঅভূর্থানে সরকার পতনের পর কলেজটিতে পুনরায় প্রবেশ করতে পারে সাবেক প্রয়াত এমপি মোজাম্মেল হকের পরিবার। এসময় প্রতিষ্ঠানটির হাল ধরেন মোজাম্মেল পুত্র ব্যারিস্টার রঞ্জু।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে ব্যারিস্টার রঞ্জুকে কলেজটির পরিচালনা পর্ষদের নতুন এডহক কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করেন। ব্যারিস্টার রঞ্জুকে সভাপতি করায় দীর্ঘ ১৬ বছর পর আওয়ামী দুঃশাসনের দমন পীড়ন থেকে মুক্ত হলো প্রতিষ্ঠানটি। এ উপলক্ষে বুধবার ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে কলেজে তাঁর আগমণে তাকে ফুল দিয়ে বরণ করেন অধ্যক্ষ ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এরপর কলেজ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবর্ধণা সভায় সভাপতিত্ব করেন নবনির্বাচিত সভাপতি ব্যারিস্টার রঞ্জু।
বিএনপি নেতা নাজমুল করিম নজু বলেন, বিগত দিনে এই কলেজে বিভিন্নরকম চাঁদাবাজী, দুর্নীতিসহ অনেক অপকর্ম হয়েছে। এখন থেকে এই কলেজে কোনো অনিয়ম দুর্নীতি করতে দেওয়া হবে না।
কলেজের সভাপতি ব্যারিস্টার আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর পর কলেজ রাজনীতিমুক্ত হল। “কলেজে আর কোনো রাজনীতি নয়। শিক্ষার্থীদের মেধাবী করে গড়ে তুলতে আজ থেকে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরী করতে হবে হবে। পূর্বের সকল দ¦›দ্ব ভুলে প্রতিষ্ঠানকে নতুন করে সাজাতে হবে।
এসময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, অধ্যক্ষ মাহাতাব উদ্দিন, সাবেক অধ্যক্ষ রেজাউল করিম, বিএনপি নেতা নাজমুল করিম নজু, প্রভাষক আব্দুস সামাদ, সাবেক কাউন্সিলর সবুজ বিশ্বাস লালন, প্রভাষক মাসুদ রানা প্রমুখ।
মোঃ সোহাগ আরেফিন/এস আই আর