দিনাজপুর প্রতিনিধি: দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাসেলস ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপের অ্যান্টিভেনম মজুদ রয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মশিউর রহমান।
সাধারণত বর্ষা মৌসুমে সাপের উপদ্রব বেড়ে যায়। এসময় সাপের আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ায় সাপ উঁচু জমিতে, বাড়ির আনাচে-কানাচে, ঝোঁপ-ঝাঁড়ে অবস্থান করে। কিন্ত এই সাপ নিয়ে সাধারণ মানুষের ধারণা ও ভীতি এবার অন্যরকম। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিষাক্ত রাসেলস ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপ দেখা দেওয়ায়, বর্তমানে আতঙ্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে এই রাসেলস ভাইপার (চন্দ্রবোড়া)। এ নিয়ে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতেও জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই । বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রচারণায় এ আতঙ্ক আরও বেড়ে চলছে। এ নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, দেশের বিষধর সাপগুলোর মধ্যে রাসেলস ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) একটি। এ সাপ কামড়ের ৭২ ঘন্টার মধ্যে চিকিৎসা না নিলে রোগীর মৃত্যু হতে পারে। তবে সু-চিকিৎসা নিলে রোগী বাঁচতে পারে।
একসময় বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হলেও নতুন ভাবে দেখা দিয়েছে এই সাপ। এই সাপ ঘনবনে থকে না সাধারণত এরা খোলা ঘাস-বন, ঝাড়-জঙ্গল, কৃষি জমিতে থাকতে পছন্দ করে এবং মানুষের বসতি এড়িয়ে চলে। সাপটি মেটে রঙের হওয়ায় মাটির সাথে সহজে মিশে যেতে পারে। রাসেল ভাইপার দক্ষ সাঁতারু হওয়ায় নদীর স্রোতে ও বন্যার পানিতে ভেসে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিস্তৃত হতে পারে। এই সাপের বিশেষত্ব হচ্ছে, এরা দ্রুত বংশবিস্তার করতে পারে। এরা অন্যান্য সাপের মত ডিম পাড়েনা। সরাসরি বাচ্চা প্রসব করে। একটি পূর্ণ বয়স্ক সাপ ৩০-৮০ টি পর্যন্ত বাচ্চা দিতে পারে। এরা অন্য সাপের মত মানুষ দেখলে পালিয়ে যায় না বরং চুপচাপ থাকে। এদেরকে কেউ বিরক্ত করলে কামড় বসিয়ে দেয়। এদের বিষ এতটাই মারাত্মক যে, কামড় দেয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যে এন্টিভেনম না নিলে মৃত্যু নিশ্চিত। তাই আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
ফুলবাড়ীতে বিষধর রাসেল ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপের দেখা না মিললেও আতঙ্কিত রয়েছে সাধারণ মানুষ। আশার কথা হচ্ছে, ফুলবাড়ীতে বিষধর রাসেলস ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপের এন্টিভেনম পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে, তাই অহেতুক আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মশিউর রহমান।
ডা. মশিউর রহমান বলেন, ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাসেলস ভাইপারসহ চারটি বিষধর সাপের ১৮ টি অ্যান্টিভেনম মজুদ রয়েছে। যেকোন সাপে কামড় দিলে যতটা দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে। কামড় দেয়ার প্রথম কয়েক ঘন্টা রোগীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই এ সময় ওঝা বা কবিরাজের কাছে গিয়ে সময় নষ্ট না করা। ওই সময় রোগীকে হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে রেখে প্রয়োজন মত চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়।
তিনি আরও বলেন, এন্টিভেনম সাধারণ কোন ভ্যাক্সিনের মতো নয়। এটি প্রয়োগ করার আগে সাপটি কতটা বিষধর, আদৌ বিষধর কিনা তা নিশ্চিত হতে হয়। এজন্য সাপে কাটা রোগীকে পর্যবেক্ষণে রেখে প্রয়োজন মত এন্টিভেনম দিতে হয়।
তাজকিরাতুল হক তানভীর/এস আই আর