তীব্র গরম, থার্মোমিটারের পারদ উঠেছে ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তার সাথে বিদ্যুৎ থাকে না প্রায়ই। বাসাবাড়ির ফ্রিজও কাজ করছে না। ফলে অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে খাবার সংরক্ষণ আর নিজেদের ঠাণ্ডা রাখতে বরফের চাহিদা তুঙ্গে উঠেছে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে। আর এই সুযোগে বরফের দাম এত বেড়েছে যে তা রুটি-দুধের দামকেও ছাড়িয়ে গেছে।
বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, স্থলবেষ্টিত এই দেশটিতে রেকর্ড ভাঙা তাপমাত্রা মানেই রুটি-দুধের চেয়ে বরফের দাম বেড়ে যাওয়া।
রাজধানী বামাকোর কিছু জায়গায় ছোট এক ব্যাগ বরফের দাম ১০০ ফ্রাঙ্ক সিএফএ (মালির মুদ্রা)। যা কিনতে মাঝেমধ্যেই ৩০০-৫০০ ফ্রাঙ্ক সিএফএ পর্যন্ত দিতে হয়। অথচ দেশটিতে ভালো মানের রুটি ২৫০ সিএফএ-তে পাওয়া যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা নানা কোনাত ট্রাওরকে বলেন, আমাদের সারাদিনই বিদ্যুৎ থাকে না। ফলে খাবার নষ্ট হয়ে যায়। আর খাবার নষ্ট হলে তো আপনাকে ফেলে দিতে হবে।
সৌমাইলা মাইগা নামে এক যুবক বলেন, রাতে তাপমাত্রা ওঠে ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা অসহ্য। আমার মাথাঘোরার সমস্যা আছে। ফলে তীব্র তাপমাত্রা সহ্য করতে মাথায় পানি ঢালতে হয়।
মালিতে গত মার্চেই তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছিল। তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সবচেয়ে শোচনীয় অবস্থার মধ্যে রয়েছে বয়স্ক ও শিশুরা।
রাজধানী বামাকোর ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের অধ্যাপক ইয়াকুবা তোলোবা বলেন, গরমে অসুস্থ হয়ে দিনে ১৫ জনকেও হাসপাতালে ভর্তি হতে দেখেছেন তিনি। অনেক রোগী পানিশূন্যতায় ভুগছে। তাদের প্রধান উপসর্গ হলো কাশি ও শ্বাসতন্ত্রের জটিলতা। কারও কারও শ্বাসকষ্টও রয়েছে।
অধ্যাপক তোলোবা বলেন, এই পরিস্থিতির জন্য আমাদের আরও পরিকল্পনা প্রয়োজন। এবার গরম আমাদের অবাক করে দিয়েছে।
মালির প্রতিবেশী সেনেগাল, গিনি, বুরকিনা ফাসো, নাইজেরিয়া, নাইজার ও শাদও প্রাণঘাতী তাপপ্রবাহে আক্রান্ত।