ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা হয়েছে। লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবু্ল্লাহ এ হামলা চালিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, বুধবার তারা ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের তিবেরিয়াস শহরের পশ্চিমে একটি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। ঘাঁটিটি লেবাননের সীমান্ত থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এটি দেশটি থেকে ইসরায়েলের সবচেয়ে গভীরে হামলা।
গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, ইলানিয়া ঘাঁটিতে এ হামলায় প্রথমবারের মতো আত্মঘাতী ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে। এটি ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি। ঘাঁটিটির পর্যবেক্ষণ ও শনাক্তকরণ ব্যবস্থার একটি অংশে এ হামলা চালানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হিজবুল্লাহর এ হামলা নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। এ হামলার লক্ষ্যও অর্জন সম্ভব হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় হামলা শুরুর পর ইসরায়েলের এত গভীরে এটি প্রথম হামলার। এর আগে লেবাননের ১০ কিলোমিটার ভেতরে নাহারিয়ার ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছিল হিজবু্ল্লাহ। ফলে এটিই ইসরায়েলের সবচেয়ে গভীরে লেবাননের হামলা।
লেবাননের এ হামলার বিষয়ে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী কোনো মন্তব্য করেনি। তবে ইসরায়েলি আর্মি রেডিও বুধবার সকালে জানায়, লেবানন থেকে ইসরায়েলের সীমান্তর্তী বিভিন্ন শহরে বেশ কয়েকটি রকেট ছোড়া হয়েছে।
এর অগে সোমবার (১৩ মে) আরব নিউজ জানিয়েছে, অধিকৃত লেবাননের শেবা ফার্মের কাছে ইসরায়েলের একটি সেনা সমাবেশকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ। দেশটিতে এ হামলায় জিহাদ মুগনিয়া নামের নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
হিজবুল্লাহর সাবেক এক যোদ্ধার নামে এ ক্ষেপণাস্ত্রের নামকরণ করা হয়। ২০১৫ সালে জিহাদ মুগনিয়া নামের ওই যোদ্ধা ইসরায়েলি গুপ্তচরদের হামলায় নিহত হন।
হিজবুল্লাহর বিবৃতিতে বলা হয়, নতুন এ ক্ষেপণাস্ত্র সুনির্দিষ্ট লক্ষবস্তুতে নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে সক্ষম। এটি দিয়ে হামলা চালালে বেশ বড় রকম ক্ষয়ক্ষতির কথাও জানায় গোষ্ঠীটি।
এর আগে লেবাননের এ সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসরায়েলের একটি গোয়েন্দা সামরিক যানে কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। এ ছাড়া ইসরায়েলের হুনিন ব্যারাকে মোতায়েন করা কয়েকটি কারিগরি ডিভাইসে হামলা চালায় তারা।
গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। গত নভেম্বরে সাতদিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিনিময়ে ১১০ ইসরায়েলি বন্দিকে হামাস মুক্তি দিলেও এখনো তাদের হাতে শতাধিক বন্দি আছেন।
অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। এ ছাড়া এ পর্যন্ত ৭৯ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।