ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় দখলদার ইসরায়েলের নির্বিচারে হামলায় নিহতের সংখ্যা ২৯ হাজার ৭৮২ জনে পৌঁছেছে। সোমবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য জানিয়েছে। এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন যে, আগামী সোমবারের মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি হতে পারে।
সোমবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের আক্রমণ অব্যাহত থাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৯০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১৬৪ জন আহত হয়েছেন। খবর আনাদুলু এজেন্সির গাজায় আহতের সংখ্যা ৭০ হাজার ৪৩ জন। গাজা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকে আছে কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না।
সোমবার একটি পৃথক বিবৃতিতে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নিশ্চিত করেছে যে গাজা উপত্যকায় তাদের পাঁচ সেনা গুরুতর আহত হয়েছে।
এদিকে আগামী সোমবারের (৪ মার্চ) মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে পারে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি ইস্যুতে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ ও হামাসের মধ্যে কার্যকর আলোচনা চলছে। সম্ভাবনা আছে- শিগগিরই ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারে উভয়পক্ষ। এই ইস্যুতে এরই মধ্যে কয়েক দফায় বৈঠক করেছে মিসর, কাতার, ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র এবং হামাসের প্রতিনিধিরা।
শনিবার প্যারিসে, রোববার দোহায় বৈঠকের পর এবার কথা রয়েছে কায়রোতে আলোচনায় বসার। তবে যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যেও গাজায় অব্যাহত রয়েছে ইসরাইলি আগ্রাসন। সোমবারও রাফায় ভয়াবহ তাণ্ডব চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা।
নির্বাচনী প্রচারের কাজে নিউইয়র্ক সফর করছেন জো বাইডেন। সফরকালে সাংবাদিকেরা তাঁর কাছে জানতে চান যে, গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি আলোচনা কোন অবস্থায় আছে এবং কবে নাগাদ এটি কার্যকর হতে পারে। জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি আশা করি, চলতি সপ্তাহের শেষ দিকের মধ্যেই এটি কার্যকর হবে।’
বাইডেন বলেন, ‘আমার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আমাকে বলেছেন যে, আমরাই কাছাকাছি, খুবই কাছাকাছি তবে বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।’
বাইডেনের এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এল যার মাত্র কয়েক দিন পরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লক্ষ্যে মিশিগান রাজ্যে প্রাইমারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই রাজ্যে ফিলিস্তিনপন্থী ভোটারেরা বাইডেনের ইসরায়েলপন্থী অবস্থানকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। ভোটারেরা হুমকি দিয়েছে, তারা প্রয়োজনে বাইডেনের পরিবর্তে একজন ‘অপ্রতিশ্রুতিশীল’ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন।
ইসরায়েল বলছে, শিগগিরই কোন চুক্তি না হলে তারা রাফাহ শহরে আক্রমণ চালাবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে ইসরায়েলকে সতর্ক করে দিয়েছে। ওই অঞ্চলের লোকজনের মধ্যে হতাশা ও ক্ষুধা বিরাজ করছে।