সোমবার, মার্চ ২৪, ২০২৫
spot_img

ইবিতে গুণীজন সংবর্ধনা-২০২৪ অনুষ্ঠিত

ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) কর্মকর্তা সমিতির আয়োজনে গুণীজন সংবর্ধনা-২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী শিক্ষার্থী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র অ্যাডভোকেট জনাব শাহ মনজুরুল হক এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের ট্রেজারার অ্যাডভোকেট জনাব মোহাম্মদ নুরুল হুদা আনছারীকে সংবর্ধিত করা হয়।

শনিবার (১৮ মে) বেলা ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে এ গুণীজন সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন ইবি কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ওয়ালিদ হাসান মুকুট। এসময় জাতীয় সংগীত, প্রয়াত সকল কর্মকর্তার স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন, অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ, উত্তরীয় ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি দেওয়ান টিপু সুলতানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ও সিনিয়র অ্যাডভোকেট, অ্যাটর্নি জেনারেল জনাব এ এম আমিন উদ্দিন। প্রধান আলোচক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম, গেস্ট অব অনার প্রাপ্ত অতিথি, সাবেক এমপি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট, সচিব অধ্যক্ষ ড. মো: শাহজাহান আলম সাজু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইবি উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: মাহবুবুর রহমান, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো: আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট কে এম মাসুদ রুমী, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট বি এম আবদুর রাফেল।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. বাকি বিল্লাহ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন, কুষ্টিয়া আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) এটিএম এমদাদুল আলম। স্মারক বক্তা ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান।

অনুষ্ঠানে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব ও সাবেক এমপি অধ্যক্ষ ড. শাহজাহান আলম সাজু বলেন, আমরা গর্ব করে বলতে পারি বাংলাদেশের আইন জগতে একজন মঞ্জু আছে, বর্তমান সরকারের দুইজন পূর্ণসচিব আছে যারা ইবির সাবেক কৃতী ছাত্র যাদের হাত দিয়ে বাংলাদেশের ডেভেলপমেন্ট পাশ হয়। আমাকে রেজিস্টার বিল্ডিং থেকে উঠিয়ে নেওয়ার চেষ্টার দিন এই কর্মকর্তারা যদি বেরিকেড দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাকে উদ্ধার না করতেন তাহলে হয়তো আমার লাশও খুঁজে পাওয়া যেত না। কর্মকর্তা সমিতির কাছে আমাদের সারাজীবন মাথা নত হয়ে থাকবে।

এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী, অমুসলিম ভর্তি করতে গিয়ে, বাংলা ইংরেজি সহ সাইন্সের আধুনিক ডিপার্টমেন্ট খুলতে যেয়ে, অন্য দুটি সংগঠনের সাথে আমাদের সংঘর্ষ হয়েছিল, তাদের একজনের মামলায় আমাদের ৬ মাসের সাজাও হয়েছিল। যে বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা মুক্তবুদ্ধি চর্চার প্রতিক হিসেবে দেখতে চেয়েছিলাম তার শতভাগ না হলেও অনেকটা কাছাকাছি আমরা গিয়েছি। যখন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন ভাল খবর পাই তখন আমাদের অত্যন্ত আনন্দ লাগে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম অর্জন করা অনেক কঠিন, ধ্বংস করা অনেক সহজ। ক্ষমতা আছে বলে এমন কোন কাজ করবেন না যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়, সুনাম নষ্ট হয়৷

সংবর্ধিত অতিথি সুপ্রিম কোর্ট বার এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাহ মনজুরুল হক বলেন, আমি যখন সুপ্রিম কোর্টের ইলেকশন করেছি তখন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক শিক্ষার্থী সহ অনেকে প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে আমাকে অনেক সাহায্য সহযোগিতা করেছে। যখনি আমাদের যখনই ডাকা হয় আমরা অত্যন্ত আগ্রহভরে উপস্থিত হওয়ার চেষ্টা করি করার কারণ জন্মস্থানের পরে যে জিনিসটা মানুষের সাথে সবচেয়ে বেশি সংশ্লিষ্ট সেটা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়কে ধারণ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমরা যারা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিতি বহন করি প্রত্যেকের উচিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম, সার্বিক পরিস্থিতি সবার সামনে ভালোভাবে উপস্থাপন করা। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যদি স্মার্ট বাংলাদেশের নাগরিক তৈরি করে দেওয়া না হয় তাহলে এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা খুবই কঠিন হবে। তাই আমার অনুরোধ থাকবে, আমরা প্রত্যেকেই স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরীর কারিগর হিসেবে এই দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ বানানোর অঙ্গীকার ব্যক্ত করা।

প্রধান আলোচকের বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, আমরা সকলের জানি পৃথিবীতে মানুষ হেরে দুঃখ পায়, জিতে আনন্দ পায়। কিন্তু একটি জায়গা আছে যেখানে হেরে আনন্দ পাওয়া যায়। তেমনি ছাত্র আর পুত্রের কাছে শিক্ষকরা হেরে গিয়ে আজকে আমি প্রচন্ড আনন্দবোধ করছি। আজকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা যে ছাত্রদের নিয়ে এধরনের সভার আয়োজন করলাম তারা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডী পেরিয়ে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ধ্রুবতারার মতো প্রজ্জ্বলিত। এতো ব্যস্ততার ভেতরেও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েটদের এই আগমন এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানকে আলোকিত করে তুলেছে। আমরা সত্যি আজকে আলোকিত। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এই মঞ্চে সামনে যারা বসে আছেন, যারা সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন একদিন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে তারা আরও আরও বেশী আলোকিত ও সমাদৃত করবেন।

প্রধান অতিথি অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আজকেই আমার প্রথম পদচারণ। আমি বারের সদস্য হিসেবে দেখি আপনাদের ছেলেরা বিভিন্ন জায়গায় ভালো অবস্থানে আছে। যে দু’জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (মাসুদ রুমী, আব্দুর রাফেল) এখানে উপস্থিত তাঁরাও আদালত প্রাঙ্গণে অত্যন্ত সুকৌশলে কাজ করছেন। বিচারক সহ আরও অনেক অ্যাডভোকেট সুপ্রিমকোর্টে ভালো অবদান রাখছেন। এগুলো শিক্ষকদের অবদান। আমি অনুরোধ করব যে শিক্ষার্থীদের সুপ্রিমকোর্ট পরিদর্শন করাতে যাতে করে বাস্তবতা অভিজ্ঞতাসহ সম্যক জ্ঞান অর্জিত হয়।

রবিউল আলম/এস আই আর

- Advertisement -spot_img

রাজনীতি

আবেদন করতে ব্যানারে ক্লিক করুন...spot_img

সর্বশেষ সব খবর