জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকার কাজের শুরু থেকে মাস্টারপ্ল্যানের দাবিতে সামনের সারি থেকে আন্দোলন করে আসছিলেন ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাবেক সভাপতি নজির আমিন চৌধুরী জয়।
তবে বর্তমানে চলমান চারুকলা ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে পল্টি নিয়েছেন তিনি। এছাড়াও সম্প্রতি সময়ে প্রশাসনের কাছ থেকে সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের ৪২ তম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন জয়। তিনি ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাবেক সভাপতি। এছাড়াও ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতিও ছিলেন নেই নেতা।
বর্তমানে ক্যাম্পাসে ছাত্র ইউনিয়নের দুটি গ্রুপ রয়েছে। একটি অমর্ত্য-ঋদ্ধ গ্রুপ আরেকটি আলিফ-ইমন গ্রুপ। তবে অমর্ত-ঋদ্ধ গ্রুপটির পিছন থেকে নেতৃত্ব দেন এই নেতা। অভিযোগ রয়েছে, অন্যান্য ভবনের ইস্যুতে এই গ্রুপটি সরাসরি বাধা প্রদান করলেও চারুকলা ভবন ক্ষেত্রে কোন বাধা প্রদান করেননি। আলোচনার মাধ্যমেই প্রতিবাদ সীমাবদ্ধ রেখেছিলো।
সূত্র জানায়, জয়ের নির্দেশে এই গ্রুপটি চারুকলা ভবনের বিপক্ষে অবস্থান নিতে পারিনি।
এদিকে চারুকলা ভবনকে ঘিরে তিনটি মিটিংয়ের আয়োজন করেন প্রকল্প পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক এম এম ময়েজউদ্দিন। প্রথম মিটিংয়ে আন্দোলনকারীরা মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া ভবন নির্মাণের প্রতিবাদ করলে ক্ষেপে যায় এই জয়।
পরে এই নেতা সাংবাদিক, আন্দোলনকারীসহ অন্যান্যদের নানানভাবে বুঝাতে চেষ্টা করেন । দ্বিতীয় ও তৃতীয় মিটিং শেষেও তিনি একই কাজ করেছেন। সর্বশেষ এই নেতা ফেসবুকে পোস্ট দেয়। সেখানে তিনি মাস্টারপ্ল্যান ছাড়াই চারুকলা ভবনের পক্ষে সাফাই গায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রকল্প পরিচালক এম এম ময়েজ উদ্দিনকে সাথে নিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের আলিফ-ইমন গ্রুপ এবং জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের দুই শীর্ষ নেতা, সাংবাদিকদেরও বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন নেতা । তিনি সবাইকে এটা বোঝাতে চেষ্টা করেন কেনো চারুকলা ভবন করা জরুরি। কেন মাস্টারপ্ল্যাণের অপেক্ষায় থাকা যাবে না। তবে ছাত্র ইউনিয়নের আলিফ-ইমনকে বুঝাতে ব্যর্থ হন তিনি।
পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের নিয়ে চরম আক্রোশমূলক পোস্ট করেন তিনি। তিনি এই পোস্টের মাধ্যমে মাস্টারপ্ল্যান ছাড়াই চারুকলা ভবন নির্মাণের পক্ষে প্রচারণা চালান। এতে সমালোচনার মুখে পড়েন জয়। নেই নেতার সমসাময়িক আন্দোলনকারীরা তাকে পল্টিবাজি বলে আখ্যায়িত করেন।
অভিযোগ উঠেছে, জয় চারুকলার প্রকল্প থেকে বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এবং চারুকলা অনুষদ হওয়ার পর একটা চাকরি নিতে তদবির করছেন।
এসব বিষয়ে নজির আমিন চৌধুরী জয় বলেন, ’আমি মাস্টারপ্ল্যানের বিপক্ষে নই, আমি শুধু চেয়েছি শুধু চারুকলা কেন্দ্রীক আন্দোলন না হোক। ক্যাম্পাসে অন্যান্য ভবনের জন্য গাছপালা কাটা হচ্ছে সেগুলো নিয়েও কথা হোক।’
চাকরির তদবিরের বিষয়ে তিনি বলেন, ’চাকরি আমি করবো না।আমার আলাদা পরিকল্পনা আছে। আমাদের পারিবারিকভাবে অনেক জমি আছে সেগুলো নিয়ে পরিকল্পনা আছে।’
মোঃ মেহেদী হাসান/এস আই আর