নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ব্যানারে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। গত ৬ আগষ্টের পর থেকে বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন শুরু হলেও কয়েকদিন ধরে ক্যাম্পাসে দুটি আলাদা দাবির ব্যানারে মিছিল লক্ষ্য করা গেছে। আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন একাধিক প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং বহিরাগত এলাকাবাসীরাও।
গত রোববার (১১ আগষ্ট) থেকে তিন দফা দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীদের একটি দল আন্দোলন করছে। যাদের দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, রেজিস্ট্রার, ট্রেজারার, পরিবহন প্রশাসকসহ কিছু কর্মকর্তার পদত্যাগ ; দলীয় ছাত্র, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর রাজনীতি নিষিদ্ধ ও এর ব্যত্যয় ঘটলে কঠোর শাস্তির বিধান এবং প্রশাসনের বর্তমান প্রজ্ঞাপন বাতিল করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে নতুন প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ।
তবে পরদিন থেকে আরেকটি দল এক দফা দাবি নিয়ে আন্দোলনে নামেন, যারা শুধুমাত্র উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, এবং ট্রেজারারের পদত্যাগ চায়।
তিন দফা দাবিদারদের মধ্যে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জাকির হোসেন বলেন, “আমাদের দাবিতে আমরা অটল থাকব। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের নিরাপত্তা দিচ্ছেন। সবগুলো দাবি পূরণ না হলে আমরা ক্লাসে ফিরবো না।”
অন্যদিকে, এক দফা দাবি নিয়ে গত ১২ আগস্ট থেকে আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী (প্রাক্তন) শাকিল আহমেদ শুভ। তার একমাত্র দাবি উপাচার্যের পদত্যাগ। অনশনরত অবস্থায় রাতেই অসুস্থ হলে তাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় বলে এক ফেসবুক পোস্টে জানা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শহিদুল ইসলাম বলেন, ৩ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন করছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আর শুধু মাত্র ১ দফার জন্য আন্দোলন করছে অসাধারণ শিক্ষার্থীরা। তাই বুঝতে হবে বিভক্তি কেনো।
ক্যাম্পাসের হলগুলোতে দলীয় রাজনীতির গন্ধ পেয়ে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সুফিয়ান জানান, “বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন রাজনীতি বহাল রাখতে পারে সেই কারণে দাবি নিয়ে নেমেছেন অনেকে। হলে এসে শিবির বিএনপি পন্থিরা হুশিয়ারি দিচ্ছে। ৩ দফা দাবিতে ভিসির পদত্যাগ চাওয়া হয়েছে এবং সকল প্রকার রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। আর আজকে রুমে এসে ছাত্রলীগের মত জোরে জোরে দরজা ধাক্কা দিচ্ছিলো তারা। এরা সবাই ৯, ১০, ১১ তম ব্যাচ এর প্রাক্তন, একজনও বর্তমানে ছাত্র না। যখন আইডি কার্ড দেখাতে বলছি, তখন হুমকি দেওয়া শুরু করে।”
বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের দাবি, এই আন্দোলন মূলত বিশেষ কিছু গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা। ইতোমধ্যে, মতবিরোধের কারণে একাংশের শিক্ষার্থী আন্দোলন থেকে সরে গেছেন বলেও জানান তারা।
মো. সাইফুল ইসলাম/এস আই আর