ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান ও আল-হাদীস বিভাগের অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান স্যারের উপর সন্ত্রাসী হামলার বিচারের দাবীতে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে বটতলা বিক্ষোভ সমাবেশটি শুরু হয় । বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন প্রান্তে মিছিল শেষ আবারো বটতলায় সংক্ষিপ্ত কর্মসূচি পালন করে।
এসময় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের হামলার বিপক্ষে প্রতিবাদ মূলক স্লোগান দেয় এবং তীব্র নিন্দা জানায় । শিক্ষকদের উপর হামলা কোনভাবেই কাম্য নয়। এই যাদে হামলাকারীদের সুষ্ঠু বিচারের আওতায় আনার দাবি জানায় ।
জাস্টিস ফর জুলাই ইবির সদস্য সচিব রেজওয়ান বলেন- ছাত্রবান্ধব শিক্ষকের উপর যে বর্বর রচিত হামলা করা হয়েছে, সে হামলার প্রতিবাদ সমাবেশে এসে সবাইকে জানাই বিপ্লবী সালাম আসসালামু আলাইকুম। গতকালকে আমরা লক্ষ্য করলাম সামান্য একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের মাঝে সংঘর্ষ সংঘটিত হলো। এতে আমরা দুঃখিত ও মর্মাহত। এটি একটি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের কর্মকান্ড হয়েছে । যদি বাসে সিট ধরাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রদের মাঝে এরকম বাক-বির্তক মারামারি পর্যায়ে পৌঁছে যায় এর চেয়ে বড় দুঃখজনক বিষয় থাকে না।
আজকে এই সমাবেশের পক্ষ থেকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়ে দিতে চাই আপনারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে যাতায়াতের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন প্রণয়ন করবেন। এই ঘটনার যেন পরবর্তীতে পুনরাবৃত্তি না হয়। এরপর আমরা বলতে চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর যিনি অত্যন্ত ছাত্রবান্ধব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আল হাদিস ডিপার্টমেন্ট এর শিক্ষক যিনি অত্যন্ত ছাত্রবান্ধব হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছেন এরকম দুজন স্বনামধন্য শিক্ষককে মীমাংসা হয়ে যাওয়ার পর কাদের ইন্ধনে এবং কারা হামলা করল আমরা এর সুষ্ঠু বিচার কামনা করি। হামলাকারীদের কোন পরিচয় থাকে না, তারা কোন ডিপার্টমেন্টের ছাত্র নয়, তারা মানুষ নয় তারা হামলাকারী। তারা সন্ত্রাসী । যদি এদের বিচার আপনারা সুষ্ঠুভাবে না করতে পারেন তাহলে এ ছাত্র সমাজ আপনাদের কেউ ছেড়ে দিবে না।
জাস্টিস ফর জুলাই এর সংগ্রামী নেতা- বিশ্ববিদ্যালয় সকলেই আমরা অনেক স্বপ্ন নিয়ে আসি, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার জন্য দিনরাত পরিশ্রম করি। বাবা মা আমাদেরকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে যে আমার ছেলে, আমার মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটা বড় গ্রাজুয়েশন নিয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে নিয়োজিত হবে। কিন্তু আমরা দেখেছি গতকাল যে পরিবেশটা পরিলক্ষিত হয়েছে একটি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশের সাথে কখনোই মানানসই হতে পারে না। সম্মানিত উপস্থিতি ২০২৪ সালে আমরা যে গণবিপ্লব করেছি, এই গণবিপ্লব কায়েম এর মধ্য দিয়ে ছাত্র সমাজ প্রমাণ করেছে কোন রক্ত পিপাসু ,কারো ক্ষমতা,কারো দাপট ছাত্র সমাজকে কোনদিনও রুখে রাখতে পারবে না।
আমরা রক্ত দিতে জানি আমরা জীবন দিতে জানি আমরা আমাদের স্বপ্ন, আমাদের বাবার স্বপ্ন,আমাদের মায়ের স্বপ্ন দেশ ও দেশের মানুষের জন্য জলাঞ্জলি দিতে জানি । সুতরাং সামান্য একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এতদূর গিয়েছে, আমাদের সম্মানিত শিক্ষকমন্ডলী দীর্ঘ সময় পরিশ্রম করে তাদের মধ্যে একটা মীমাংসা করেছে, দুই পক্ষ মীমাংসা মেনে নিয়েছে । কিন্তু বাহিরে আসার পর যখন আমাদের শিক্ষকেরা মীমাংসাটা সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে জানিয়ে দিতে চাচ্ছে তখন কাদের ইন্ধনে, কাদের পরামর্শে আমাদের ছাত্রসহ শিক্ষকদের উপর হামলা করা হয়েছে তার সুষ্ঠু তদন্ত আমরা চাই ।
এই চব্বিশের প্রশাসন ছাত্রদের রক্ত দিয়ে অর্জিত প্রশাসন । সুতরাং ছাত্রদের অধিকার আদায়ের জন্য , ছাত্রদের একটা সঠিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার জন্য এই প্রশাসনকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ভূমিকা রাখতে হবে। সুতরাং আমরা তাদের সময় নির্ধারণ করে দিয়েছি, আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে কারা আক্রমণ করেছে? কারা হামলা করেছে? তাদেরকে চিহ্নিত করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে আমরা সেই প্রত্যাশা করছি এবং আজকে যারা এখানে উপস্থিত হয়েছেন সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে আজকের কর্মসূচি এখানেই শেষ করছি ।
মোজাহিদুল ইসলাম/এমএ