জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট ও বাজেট বৈষম্যের প্রতিবাদে চার দফা দাবিতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা একাত্ম হয়ে ‘ঐক্য সমাবেশ’ করেছেন।
সোমবার (১২ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বরে ‘জবি ঐক্য’ নামক একটি নতুন প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সাধারণ শিক্ষার্থী, শিক্ষক, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা দাবি তোলে, “ইউজিসির কালো হাত ভেঙে দাও, গুড়িয়ে দাও”, “বাজেট বৈষম্য মানি না, মানব না”, “জেগেছে রে জেগেছে, জবিয়ানরা জেগেছে”—এমন নানা স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে সমাবেশস্থল।
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম-আহ্বায়ক নূরনবী বলেন, “প্রতিটি স্তরেই জবির প্রতি বৈষম্য করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ১১টি হল দেখানো হলেও বাস্তবে সেগুলো দখলে। প্রশাসন এখনও তা উদ্ধার করতে পারেনি। অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক হলই ভেস্টেড প্রপার্টি জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে।”
ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. বিলাল হোসেন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ। গবেষণার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজও সময়ের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে। রাতে ক্যাম্পাসে কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।”
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, জবি শাখার সভাপতি ইভান তাহসিভ বলেন, “আবাসনের দাবিতে আমি দীর্ঘ আট বছর ধরে লড়ছি। এটি কেবল জবির ইস্যু নয়, জাতীয় সমস্যা।”
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. রইছ উদ্দিন বলেন, “বহু প্রশাসন অতীতে বাইরের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে। তবে আবাসন হলো শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার। এ অধিকার থেকে কেউ বঞ্চিত থাকতে পারে না।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবিনা শারমিন জানান, “ইউজিসির সঙ্গে আলোচনা চলছে যাতে শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা বাড়ানো যায়। বিষয়টি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ।”
শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি:
১. বার্ষিক বাজেট বৃদ্ধি ও ২০২৫-২৬ অর্থবছরে অন্তত ৭০% শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন ভাতা বরাদ্দ।
২. দ্বিতীয় ক্যাম্পাস, ড. হাবিবুর রহমান হল ও বাণী ভবনের নির্মাণকাজ ১০ মে ২০২৫-এর মধ্যে শুরু।
৩. হল ও দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণের অগ্রগতি প্রতি ১৫ দিন অন্তর মুক্তমঞ্চে জানানো।
৪. আগামী ১৫ মে ২০২৫-এর মধ্যে জকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ।
আন্দোলনকারীরা জানায়, এই দাবিগুলো বাস্তবায়ন না হলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
নাহিদ ইসলাম সম্রাট/এমএ