বিভেদ ও দূরত্ব ভুলে আবারও জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে ‘সরকার পতনের’ আন্দোলনে নামতে যাচ্ছে বিএনপি। দলটির নেতারা বলছেন, যে যাই বলুক, লক্ষ্য অর্জনে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারবিরোধী সবাইকে এক করেই মাঠে নামবেন তারা। তবে যুগপৎ শরিকরা বলছেন, জামায়াতকে সঙ্গে নিলে ব্যত্যয় ঘটবে আন্দোলনে। এমন হলে সিদ্ধান্ত বদলাবেন তারা।
২০০৬ সালে ক্ষমতা ছাড়ার পর ২০১৫ সাল পর্যন্ত সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিএনপির প্রধান শক্তি হয়ে পাশে ছিল জামায়াতে ইসলামী। সে সময় বেশ শক্তি প্রদর্শনও করে ইসলামী চিন্তাধারার এই দলটি। সেই সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতা দণ্ডিত হলেও বিএনপির নিষ্ক্রিয়তায় টানাপোড়েন বাড়তে থাকে তাদের সঙ্গে। একইসঙ্গে বিএনপির ওপর বাড়তে থাকে আন্তর্জাতিক চাপও।
এর মাঝে হয়ে যায় দুই দুটি জাতীয় নির্বাচন। অনেকটা প্রকাশ্যে আসে বিএনপি-জামায়াতের দূরত্ব। তবে বেশ কয়েকটি সামাজিক অনুষ্ঠানে জামায়াতের শীর্ষ নেতারা সে দূরত্ব ও ভেদাভেদ ভুলে আবারও একসঙ্গে পথ চলার ইঙ্গিতও দেন।
জামায়াত নেতারা বলছেন, সম্প্রতি সরকার পতনের একদফা দাবির আন্দোলনের ব্যর্থতার পেছনে রয়েছে যুগপৎ আন্দোলনে শরিক কয়েকটি দল। যাদের কারণেই বিএনপির সঙ্গে মতবিরোধ ও দূরত্ব বেড়েই চলেছে তাদের।
দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম বলেন, আমাদের দিক থেকে কোনো কমতি আছে বলে মনে করি না। কোনো রাজনৈতিক দল কোনো রাজনৈতিক দলের শত্রু না। সবাই মিলেমিশে কাজ করতে চাই। কর্মসূচি বাস্তবায়নে মাঠে একসঙ্গে নামতে হবে। এখানেই ঘাটতি আছে।
সেই ঘাটতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের কারণে একসঙ্গে আন্দোলন করা সম্ভব হয়নি। সেখানেই ঘাটতি হয়েছে। আন্দোলনে ত্রুটি আছে। না থাকলে তো আন্দোলন সফলতার দিকে চলে যেত।’
তবে এ নিয়ে বাম দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য থাকলেও শরিকরা বলছেন, জামায়াতকে নিয়ে বিএনপি আন্দোলনে গেলে নতুনভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন তারা। ইঙ্গিত দেন, আন্দোলনে হতে পারে ছন্দপতন।
বিএনপি নেতারা বলছেন, জামায়াতের সঙ্গে দূরত্ব থাকলেও তা কমে এসেছে। কারও কথায় কান দিয়ে নয়, সরকার পতনের লক্ষ্যে জামায়াতকে একসঙ্গে আন্দোলনে চান তারা।
নতুন করে আবারও সরকারবিরোধী আন্দোলনের লক্ষ্যে শরিক দলগুলোর সঙ্গে ইতোমধ্যে কয়েক দফা বৈঠকও করেছে বিএনপি।