চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জে যুব মহিলা লীগ ও আ.লীগ নেত্রীদের নিয়ে আন্তর্জাতিক দূর্নীতিবিরোধী দিবস পালন করেছে জেলা প্রশাসন ও জেলা দূর্নীতিবিরোধী কমিটি। এনিয়ে তীব্র সমালোচনা ও দিবস পালনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সোমবার (০৯ ডিসেম্বর) সকালে দিবসটি উপলক্ষে মানববন্ধন ও আলোচনা সভার আয়োজন করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও জেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি।
মানববন্ধন ও আলোচনা সভায় দেখা যায়, সামনের সারিতেই জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সাথে অংশগ্রহণ করেন জেলা ও পৌর যুব মহিলা লীগের কয়েক নেত্রী। এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক মো. আব্দস সামাদ, পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম, সিভিল সার্জন ডা. এসএম মাহমুদুর রশীদ, জেলা জেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মো. ইব্রাহিম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মো. মসিউল করিম বাবুসহ অন্যান্য অতিথিরা।
জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও জেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্যদের সাথে সামনের কাতারে মানববন্ধন ও আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন, জেলা যুব মহিলালীগের প্রচার সম্পাদক বিউটি আক্তার, সদস্য আকসানা খাতুন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর যুব মহিলালীগের সভাপতি জুঁই আক্তারসহ আরও কয়েজন মহিলা ও যুব মহিলালীগ নেত্রী।
সকালে দিবসটি পালনের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বইছে তীব্র সমালোচনার ঝড়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সমন্বয়ক বলেন, অনিয়ম অন্যায় দূর্নীতি বৈষম্যের বিরুদ্ধে হওয়া দীর্ঘ আন্দোলনের পর পতন হয়েছে চরম দূর্নীতিগ্রস্থ আ.লীগের। অথচ আন্দোলনের পর এমন পরিস্থিতিতে তাদেরকেই নিয়ে দূর্নীতিবিরোধী দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হচ্ছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে আগামীতেও আমরা আবারো রাস্তায় নামতে বাধ্য হব।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি ওহিদুজ্জামান সাঈম বলেন, বিগত আ.লীগ সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক দূর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের সহযোগিতা করেছে বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন। এমনকি সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের দায়ে ইতোমধ্যে আ.লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগকে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাদের এসব অনিয়ম-দুর্নীতি, লুটপাট ও বির্তকিত কর্মকান্ডের বিচার চলমান রয়েছে। তাই এমন অবস্থায় মহিলালীগ বা যুব মহিলালীগের নেত্রীদের অংশগ্রহণ স্বাভাবিকভাবে দেখার কোন সুযোগ নেই। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।
এনিয়ে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম বলেন, এটি মেনে নেয়ার মতো বিষয় না। আ.লীগ গত ১৫ বছরে দেশে ব্যাপক দূর্নীতি-লুটপাট করেছে। অথচ দূর্নীতিবিরোধী দিবসের মতো এমন আয়োজনে তাদেরকেই আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। বিষয়টি অত্যান্ত দু:খজনক। আ.লীগের প্রেতাত্মারা এখনো প্রশাসনে বসে তাদেরকে পুর্নবাসনের কাজ করে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. মসিউল করিম বাবু মুঠোফোনে বলেন, ঘটনাটি অপ্রত্যাশিত৷ আমরা কখনো এসব আয়োজনে কোন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের আমন্ত্রণ দেয়না। আন্তর্জাতিক দূর্নীতিবিরোধী দিবসের মানববন্ধন ও আলোচনা সভার পর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আয়োজিত বেগম রোকেয়া দিবসের অনুষ্ঠানে তারা এসেছিল। সেই সুযোগে হয়ত আমাদের আয়োজনে তারা ঢুকে পড়েছিল। তবে ভবিষ্যতে এসব বিষয়ে আরও সর্তক থাকব আমরা।
আগের সরকারের কোন দোসরদের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানে হয়নি উল্লেখ করে এবিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. আব্দস সামাদ বলেন, জেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সহযোগিতায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। অংশগ্রহণকারীদের আমন্ত্রণের বিষয়টিও তারা তদারকি করে। হয়ত অন্য কোন কাজে এসে এই আয়োজনে ঢুকে পড়েছিল তারা। তবে এবিষয়ে আগামীতে আরও বেশি সর্তক থাকার আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক।
হানিফ মেহমুদ/এমএ