জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ: নওগাঁয় বেশ কয়েকদিন আগে থেকে ধান কাটা, মাড়াই ও ঘরে তোলা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। গ্রামগুলোর খাল বিল এবং জলাশয়ের ফসল ঘরে তোলার আপ্রাণ চেষ্টায় কৃষক।
সরেজমিনে, নওগাঁ জেলার ধামইরহাট উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে এই দৃশ্য লক্ষ করা হয়। মাঠের প্রায় ৮০ ভাগ ধান পেকে গেছে। শুরু হয়ে গেছে ধান কাটা ও মাড়াই করা। আবার কোথাও আধা পাকা ধান দোলে জমিতে। নিচু এলাকায় ধান কাটা ও মাড়াই করা শুরু হলেও কোথাও কোথাও আবার লক্ষ করা হয় পুরো দমে ধান কাটা আরও ১০ থেকে ১৫ দিন সময় চলতে পারে।

সরেজমিনে আলতাদিঘির আশেপাশের গ্রামে গিয়ে দেখা যায়-তীব্র তাপদাহ উপেক্ষা করেই মাঠে ধান কাটছেন কৃষকরা। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছেন। তীব্র রোদ, ভ্যাপসা গরম কিছুই তাদের কাজে ব্যাঘাত ঘটাতে পারছে না। ঘাম ঝরিয়ে ফলানো ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত তারা।
ধান চাষিদের কাছে জানতে চাইলে জানান, এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় এখনও পর্যন্ত ভালো ফলনের আশা করছেন চাষিরা। এমন অবস্থায় বজ্রসহ বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি হলে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হবে। এছাড়াও এ সময় একটু বৃষ্টি হলে নিচু এলাকার জমিতে পানি জমে যাবে। তাই সব মিলিয়ে রোদ আর গরম যত বেশিই হোক, কষ্টের ফসল ঘরে তুলতে হবে।
বাখরপুর গ্ৰামের এক কৃষক বলেন, আজকে প্রায় ১ বিঘা জমির ধান কেটেছি। আর কিছু ধান জমিতে এখন আধাপাকা আছে। এ মুহূর্তে যদি ঝড় বৃষ্টি হয় ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জমিতে পানি জমে গেলে স্বাভাবিকভাবে ধান কাটতে পারব না। আবার মাঠে ধান রাখা যাবেও না।
অন্যদিকে আরেক কৃষক বলেন, এবছর এখন পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো থাকায় ধান ভালোই হয়েছে। তাই রোদ বা গরমে এখন আমাদের সমস্যাই না। তবে এখন বৃষ্টি হলে অনেক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে আমাদের। তাই যে রকম আবহাওয়া আছে এরকম আরও বেশ কিছুদিন থাকলেও আমাদের জন্য ভালো।
ঐ গ্রামের কৃষকরা আরও বলেন, আমাদের এই এলাকায় ধান কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। সেগুলো ঘরে তোলা হচ্ছে। এখন ঝড় বৃষ্টি হলে ভোগান্তি বাড়বে। তাই আমরা চাই এমন আবহাওয়া আরও কিছুদিন যেন থাকে।
নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে- এবছর জেলায় ১ লাখ ৯১ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। যা থেকে প্রায় ১২ লাখ ৮৫ হাজার ২১৫ টন ধান উৎপাদনের আশা। ধানের আবাদ ভালো হওয়ায় ৮ লাখ ৫৬ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের আশাও করছেন কৃষি বিভাগ।
মো. এ কে নোমান/এমএ