জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ: নওগাঁর ধামইরহাটে কয়েকদিনের তীব্র গরমের পর অবশেষে আজ বিকেলে এক পশলা স্বস্তির বৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে চলা অসহনীয় গরমে যেখানে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল, সেখানে এই বৃষ্টি যেন একটি আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। স্থানীয় জনগণ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে এবং চারপাশের প্রকৃতি যেন নতুন প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
গত কয়েকদিন ধরে ধামইরহাটের তাপমাত্রা প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে ছিল, যা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি। প্রচণ্ড গরমে মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়েছে। রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা ছিল, এবং যে কজন বাইরে বেরোতে বাধ্য হয়েছিলেন তারা নানা ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। অনেকেই হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য এই গরম বিশেষ কষ্টকর হয়ে উঠেছিল।
তীব্র গরমের পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিভ্রাট পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। বিদ্যুৎ না থাকায় ফ্যান, এসি, কুলার কিছুই চলেনি, ফলে ঘরবাড়িতে থেকেও মানুষ তীব্র গরমের মধ্যে দিন কাটাতে বাধ্য হয়েছে। পানির সংকটও দেখা দিয়েছিল, কারণ বিদ্যুৎ না থাকায় পানির পাম্প চলেনি।
আজ বিকেল ৫টার দিকে হঠাৎ করেই আকাশ মেঘে ছেয়ে যায় এবং শুরু হয় ঝমঝম করে বৃষ্টি। এই বৃষ্টিতে প্রকৃতি যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। দীর্ঘদিনের জমে থাকা ধুলাবালি বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গেছে। এলাকার পুকুর, ডোবা ও নদী-নালা পানিতে পূর্ণ হয়ে গেছে। এই বৃষ্টিতে তাপমাত্রা অনেকটাই কমে এসেছে এবং মানুষের মনে স্বস্তি ফিরেছে। বৃষ্টির ফলে এলাকার কৃষকরাও স্বস্তি পেয়েছেন। মাঠের ফসল শুকিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল, সেই ফসল এখন বৃষ্টির পানিতে সজীব হয়ে উঠেছে।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, আগামী কয়েকদিনে আরও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে তাপমাত্রা কিছুটা কমবে এবং জনজীবনে স্বস্তি ফিরবে। তবে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে বন্যার সম্ভাবনা নিয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন।
বৃষ্টি হওয়ার ফলে খরা পরিস্থিতি কিছুটা হলেও নিরসন হবে এবং চাষাবাদে গতি আসবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। তবে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে সম্ভাব্য বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য স্থানীয় প্রশাসন থেকে সতর্কতার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এলাকার নিচু অঞ্চলে পানি জমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, ফলে সেসব অঞ্চলে বসবাসরত জনগণকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
এই বৃষ্টির ফলে ধামইরহাটবাসী কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছে। তাপমাত্রা কমে আসায় জনজীবন আবারো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে। সবাই আশা করছেন, আগামী দিনে এমনই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে এবং কৃষি কাজ থেকে শুরু করে জনজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
মো: এ কে নোমান/এস আই আর