শুক্রবার, মে ১০, ২০২৪
spot_img

রাশিয়ার দখলে যাচ্ছে ইউক্রেনের আরেক শহর কুপিয়ানস্ক

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন আক্রমণ করে কুপিয়ানস্ক দখল করে নেয় রাশিয়া। পরে ইউক্রেনের বাহিনী তা আবার নিজেদের দখলে নেয়। আবার রাশিয়া কুপিয়ানস্ক দখল করে নিতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা সেইমতো প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন।

শহরটির রাস্তার ধারে একটা সাইন রয়েছে। এতে লেখা ‘কুপিয়ানস্কি রাই’, অর্থ কুপিয়ানস্ক স্বর্গ। আগে এর সঙ্গে জেলা কথাটাও লেখা থাকত। এখন আর নেই। ইউক্রেন আক্রমণের দিনকয়েক পরেই রাশিয়া এই শহর অধিকার করে নেয়। সেপ্টেম্বরে ইউক্রেন আবার সেটি দখল করে। খবর ডয়চে ভেলের এই শহর হলো ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ রেল-হাব। শহরে এখন শুধু সামরিক বাহিনী ও তাদের যানবাহন চলাফেরা করছে। মাঠে চাষ হয় না। গ্রামগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। ‘স্বর্গ’ কথাটা শুধু ওই সাইনবোর্ডেই থেকে গেছে। বাস্তবে চেহারা বদলে গেছে।

শহরের কয়েক কিলোমিটার দূরেই এখন রাশিয়ার সেনা রয়েছে। তাদের গোলা শহরে এসে পড়ছে। তাদের বিমান মাঝেমধ্যেই এখানে হামলা করছে। এই শহর তাদের মর্টারের রেঞ্জের মধ্যে এসে গেছে। দুই দেশের সেনার মধ্যে এখন এখানে তীব্র লড়াই হচ্ছে।

এই শহর সাতমাস রাশিয়ার দখলে ছিল। এখন ইউক্রেনের সেনার হাতে উপযুক্ত পরিমাণে গোলাবরুদ নেই। ফলে আবার এই শহর রাশিয়া অধিকার করে নিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রবল হয়েছে।

তাতিয়ানা পেশায় চিকিৎসক। কুপিয়ানস্ক হাসপাতালের সহ-অধিকর্তা। রাাশিয়া আক্রমণ তীব্র করার পরেও তিনি তার কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু তিনি বলেন, ‘রুশরা যদি এই শহর অধিকার করে, তাহলে আমি পালাব।’ আগের বার রাশিয়া যখন শহর দখল করেছিল, তখন তারা সেখানেই ছিলেন।

তখন তাতিয়ানা রুশদের সঙ্গে তর্ক করেছিলেন, তাদের নির্দেশ মানতে চাননি। আহত রুশ সেনার চিকিৎসা করতে চাননি। তাই এবার তাকে দেখলেই রাশিয়ার সেনা গুলি করে মারবে বলে তিনি মনে করেন। তাতিয়ানা এখনো আশা করছেন, ইউক্রেনের সেনা কুপিয়ানস্ক দখলে রাখতে পারবে। তবে হাসপাতালের অবস্থা এমনিতেই খুব খারাপ। আগে যে কর্মী ছিল, এখন তার পাঁচভাগের একভাগ আছে। দক্ষ কর্মীদের অভাব রয়েছে। সমানে গোলাগুলি চলছে। তাই শহরে যারা আছেন, তারা ভয় পাচ্ছেন।

অ্যান্ড্রি কুজনিশেঙ্কো ঠিক করে নিয়েছেন রুশ সেনা শহর দখল করলে তিনি আর থাকবেন না। তার স্যুটকেস গোছানো আছে। এই তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষিকাও গতবার রুশ অধিকারের সময় রাশিয়ার সিলেবাস মেনে পড়াতে চাননি। এখন অবশ্য তিনি বাড়িতেই থাকেন। কারণ, তার মাত্র দুইজন ছাত্রছাত্রী এখানে আছে। বাকিরা ইউক্রেন বা বিশ্বের অন্যত্র ছড়িয়ে গেছে।

তিনি শিক্ষার্থীদের ভিডিওর মাধ্যমে পড়ান। এই শিক্ষিকা জানিয়েছেন, বাইরে থাকা ছাত্রছাত্রীরা মাঝেমধ্যে জানতে চায়, তাদের বাড়ি এখনো অক্ষত আছে কিনা। আর যদি রুশ সেনা শহর অধিকার করে, তাহলে স্যুটকেস নিয়ে তিনিও পালাবেন। যারা খারকিভ থেকে চলে যেতে চান, তাদের বিনা পয়সায় নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করছে ইউক্রেনের এনজিও  ‘রোস টু দ্য হ্যান্ড’।

যেসব গ্রামে নিয়মিত গোলা এসে পড়ছে, বিদ্যুৎ নেই, সেখান থেকে বয়স্ক মানুষদের তারা অন্য জায়গায় নিয়ে গেছে। এরকমই দুই জন হলেন নাদিয়া ও ভ্যালেন্টিনা। তাদের খারকিভে নিয়ে আসা হয়েছে। সেখানে খাবার, বাসস্থান দেয়া হয়েছে। সেখানে তাদের কোনো আত্মীয় নেই। কিন্তু তারা অন্তত গোলাগুলির মুখে আর নেই।

- Advertisement -spot_img

রাজনীতি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আবেদন করতে ব্যানারে ক্লিক করুন...spot_img

সর্বশেষ সব খবর