বিশেষ প্রতিবেদক: ঢাকা জেলার সাভারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আব্দুল আহাদ সৈকত (১৭) নামে এক শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ মোট ১২৬ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সাভার মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন নিহত শিক্ষার্থী আব্দুল আহাদ সৈকতের বাবা নজরুল ইসলাম। নিহত সৈকতদের বাড়ি বগুড়ার সোনাতলা থানার উত্তর দিগলকান্দি প্র্রামে। তিনি ঢাকা কমার্স কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়তেন।
মামলায় অপর আসামিরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, সাবেক সাভার উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজিব, সাভার পৌরসভার সাবেক মেয়র হাজী আব্দুল গণি, কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম মানিক মোল্লা, তেঁতুলজোড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফখরুল আলম সমর, আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হাসান তুহিন, মাজহারুল ইসলাম রুবেল, সাইদুর রহমান সুজন, শামীম আহমেদ, মিঠুন সরকার, রাজু আহমেদ, আতিকুর রহমান আতিক, মো. আব্দুল কুদ্দুস, বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সেলিম মন্ডল, সাভার পৌরসভার মেয়র আব্দুল গণির ছেলে কামরুল হাসান শাহীন ও তার ভাই মেহেদী হাসান তুষার, সায়েম মোল্লা, সাংবাদিক আপেল মাহমুদ, সাভার সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সোহেল রানা, আহমেদ ফয়সাল নাঈম তুর্য্য, হাজী মো. আব্বাস আলী, মো. হাবিজ উদ্দিনসহ ১২৬ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাত আরও ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার নথিপত্র সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট বিকাল ৬টার দিকে মো. আব্দুল আহাদ সৈকত সাভারের থানা রোডের মুক্তিরমোড় (আক্কেল আলী মোড়) এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেন। ১নং ও ১০নং ক্রমিকের আসামিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ হুকুমে এবং প্ররোচনায় উল্লেখিত আসামিরা ও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরাসহ আওয়ামী অঙ্গ সংগঠনের অজ্ঞাতনামা আরও আসামিরা হামলা চালায়। তাদের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ ধাওয়া করে যাকে পায় তাকেই এলোপাতাড়ি পেটায় এবং আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলিবর্ষণ করে।
এ সময় আসামিদের আগ্নেয়াস্ত্রের গুলি মো. আব্দুল আহাদ সৈকতের মাথার বিভিন্ন অংশে বিদ্ধ হলে তিনি রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অন্য ছাত্ররা তাকে গুরুতর অবস্থায় সাভারের এনাম মেডিকেলে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান বলেন, নিহত আব্দুল আহাদ সৈকতের বাবা বাদী হয়ে আমাদের থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় ১২৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও প্রায় ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।