নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি: নওগাঁ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজে এন্ড হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল সাফায়েত শামীমের পদত্যাগ এবং তার বিরুদ্ধে বিচার দাবিতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের আয়োজনে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৪ আগস্ট) বেলা ১২টায় কলেজের সামনে ঘণ্টাব্যাপী এই মানববন্ধনে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অভিযোগ, পানের দোকানদার থেকে অধ্যক্ষের পদে অধিষ্ঠিত হয়ে আব্দুল্লাহ আল সাফায়েত শামীম কলেজের নিয়ম-নীতি ভেঙে অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত হন। তার বিরুদ্ধে নিজের পরিবারের একাধিক সদস্যকে কলেজে চাকরি দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে।
সাবেক শিক্ষার্থী ডা. সায়মা আক্তার জানান, অধ্যক্ষ শামীম শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নানা অজুহাতে টাকা আদায় করতেন এবং তার ক্ষমতার প্রভাবে পুরো কলেজে তার দাপট ছিল। তার সময়ে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা কোনো প্রতিবাদ করতে পারেননি।
বর্তমান শিক্ষার্থী সাকিব বলেন, বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ এবং জেলা প্রশাসক ও হাইকোর্টে রীট দাখিল করা হলেও, আওয়ামী লীগ প্রভাবের কারণে কোনো তদন্ত হয়নি। তিনি আরও জানান, অধ্যক্ষ শামীম শিক্ষকদের শর্তে বাধ্য করে সাদা কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করতেন এবং প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে একতরফা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতেন। সাধারণ শিক্ষার্থীরা দ্রুত তার পদত্যাগ দাবি করেন।
কলেজের শিক্ষক ডা. ওহিদুজ্জামান জানান, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শামীম যোগদানের পর থেকেই অনিয়ম ও দুর্নীতির সূচনা হয়। শিক্ষক ও কর্মচারীদের কাছ থেকে ভবন নির্মাণের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। তার পরিবারের সদস্যরা নিয়মিত বেতন পেলেও, তারা কোনো কাজ করেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ডা. ওহিদুজ্জামান আরও বলেন, অধ্যক্ষ শামীম তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কলেজ পরিচালনায় একটি ভুয়া পকেট কমিটি গঠন করে নিয়েছেন। তার শালিকা ডাঃ মোছা. হাফিজা আক্তার, শ্যালক ডা: মো. খোরশেদ আলম, ভায়রা- ডাঃ মো. রুহুল আমিন ও পরিচালনা পরিষদের সদস্য কাজী আতিকুর রহমানের সহধর্মিনী ডাঃ মোছা. হেলেনা আক্তার ও তার বোন ডাঃ মোছা. ছাবিনা ইয়াসমিনকে কলেজে নিয়োগ দিয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির মাধ্যমে পরিচালিত করছেন। প্রতিবাদ করলে সে সময় তিনি ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব দেখিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন।
শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের দাবি, এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদত্যাগ নিশ্চিত করা হোক।
মোঃ এ কে নোমান/এস আই আর