নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে চলমান বিতর্কের কেন্দ্রে এখন সাংবাদিক সমিতি। দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ তুলেছেন, সমিতির দায়িত্বশীল সদস্যরা কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়াই দর্শন বিভাগের শিক্ষক জনাব তারিফুল ইসলামকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর এবং অপমানজনক তথ্য প্রচার করেছেন। শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, এই ধরণের আচরণ একজন সম্মানিত শিক্ষকের মান-সন্মান ক্ষুণ্ণ করার শামিল, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
গত ২১ আগস্ট (বুধবার) জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির ফেসবুক পেইজে প্রকাশিত একটি পোস্টারে জনাব তারিফুল ইসলামের একটি ছবি সংযুক্ত করে লেখা হয়, “পদত্যাগ করেছেন আলোচিত হাউজ টিউটর”। এই পোস্টের মাধ্যমে শিক্ষক তারিফুল ইসলাম সম্পর্কে এমন একটি বার্তা ছড়িয়ে পড়ে যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়।
কিন্তু পরবর্তীতে ২৮ আগস্ট (বুধবার) একই পেজ থেকে পুনরায় একটি পোস্টে বলা হয়, “এখনো পদত্যাগ করেননি সমালোচিত শিক্ষক জনাব তারিফুল ইসলাম।” এই পোস্টে সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ফাহাদ বিন সাইদ কমেন্ট করেন, “লজ্জা নেই এদের, নির্লজ্জ।”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে।
প্রতিবাদ জানিয়ে দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীরা সাংবাদিক সমিতির উদ্দেশ্যে সাতটি প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন। তাদের দাবী, সমিতি কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য বা প্রমাণ ছাড়াই জনাব তারিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে এমন বিতর্কিত সংবাদ প্রকাশ করেছে।
তারা অভিযোগ করেছেন যে, সমিতি তাদের পেইজে এবং ব্যক্তিগত প্রোফাইল থেকে যেসব তথ্য প্রচার করেছে, তা যাচাই-বাছাই ছাড়া এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ ছাড়াই করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, এই ধরণের দায়িত্বজ্ঞানহীন সংবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যকার সুসম্পর্ক বিনষ্ট করছে।
শিক্ষার্থীরা আরও জানতে চেয়েছেন, কেন জনাব তারিফুল ইসলামকে “সমালোচিত” আখ্যা দেয়া হলো এবং কোন ভিত্তিতে তার পদত্যাগের গুঞ্জন ছড়ানো হলো।
শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, সাংবাদিক সমিতিকে তাদের করা সাতটি প্রশ্নের স্পষ্ট এবং যুক্তিযুক্ত জবাব দিতে হবে। অন্যথায়, সমিতির সদস্যদের এই ধরণের দায়িত্বজ্ঞানহীন সংবাদ প্রচারের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীরা আরো জানান, “জনাব তারিফুল ইসলাম একজন দায়িত্ববান শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের প্রিয় এবং তার বিরুদ্ধে কোনো গুরুতর অভিযোগ নেই। এ ধরনের সংবাদ প্রচারের উদ্দেশ্য কি, তা আমরা জানতে চাই।”
এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিক সমিতি এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। সমিতির সভাপতির কাছে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন আরো জোরালো হয়ে উঠছে।
দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীবৃন্দের পক্ষ থেকে এমন তৎপরতা সাংবাদিকতার নীতি ও মানদণ্ড সম্পর্কে নতুন করে চিন্তা করতে বাধ্য করবে বলেই মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরাও।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী আবির হাসান বলেন, সাংবাদিকতা এক মহান পেশা এবং এটি জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছানোর মাধ্যম। কিন্তু সাংবাদিক সমিতির এসব পোস্টে তা মনে হচ্ছে না। এরা সুযোগ-সন্ধানী ও গুজব নিউজ ছড়িয়ে সবার এটেনশন নিয়ে চলতে চায়।
মো. সাইফুল ইসলাম/এস আই আর