সোমবার, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৪
spot_img

মৌলভীবাজারে বাগান বন্ধের ঘোষণায়,চা শ্রমিকদের বিক্ষোভ

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের ফুলতলা চা বাগানে বকেয়া মজুরি ও বাগান বন্ধের ঘোষণার প্রতিবাদে বাগানের ফ্যাক্টরির সামনে প্রায় দেড় হাজার চা শ্রমিক বিক্ষোভ করেছে। শ্রম আইন না মেনে এভাবে হঠাৎ করে এভাবে বাগান বন্ধের নোটিশে ও বকেয়া মজুরির দাবিতে শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে বুধবার (২৮ আগস্ট) সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন।

জানা যায়, বিগত ৯ সপ্তাহ ধরে শ্রমিকের মজুরি ও রেশন বন্ধ রয়েছে। তিন মাসেরও বেশী সময় ধরে বেতন পাচ্ছেন না কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ ছাড়াও বাগানের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে গত বছরের অক্টোবর থেকে। গত মার্চ মাস থেকে বাগান পরিচালনার জন্য মালিক পক্ষ থেকে কোন টাকা দেওয়া হচ্ছে না। বাগানের উৎপাদন আয় থেকে ব্যয় বেশি হওয়ায় বাগান ম্যানেজমেন্টের পক্ষে চা পাতা বিক্রি করেও বাগান চালানো সম্ভব হচ্ছে না। মজুরি ও রেশন না পেয়ে শ্রমিক পরিবারগুলোর বেহাল অবস্থায় দিন কাটছে। এর মধ্যে দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট, অর্থনৈতিক মন্দা এবং অন্যান্য ব্যবসায়িক নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণ দেখিয়ে “দি নিউ সিলেট টি এস্টেটস লিমিটেড” এর ফুলতলা চা বাগানের সকল কার্যক্রম এ বছরের আগামী ৮ অক্টোবর পর্যন্ত সাময়িকভাবে বন্ধ করার মালিক পক্ষ নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তবে দেশের চলমান সার্বিক অবস্থার উন্নতি হলে বাগান চালু হবে বলে জানানো হয়।

ফ্যাক্টরি ঘেরাও করে শ্রমিকদের বিক্ষোভের খবর পেয়ে সেখানে সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার আকারুল ইসলাম, জুড়ী থানার ওসি মেহেদী হাসান, ফুলতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম সেলু, ইউপি সদস্য ইমতিয়াজ গফুর মারুফ ও স্বপন মল্লিক উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদের সমস্যা দ্রুত সমাধানে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ হয়।

সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার আকারুল ইসলাম বলেন, শ্রমিকদের সকল যৌক্তিক দাবি দাওয়া বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

জুড়ী থানার ওসি মেহেদী হাসান বলেন, শ্রমিকদের ন্যায্য বকেয়া মজুরি পেতে সবধরণের সহযোগিতা করা হবে। খুব দ্রুত বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

ফুলতলা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক শিহাব উদ্দিন বলেন, আগামী ৮ অক্টোবর পর্যন্ত বাগান বন্ধ ঘোষণা দিয়ে মালিক পক্ষ থেকে একটা চিঠি দেওয়া হয়েছে। বাগানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৩ মাস থেকে বেতন বাকি রয়েছে। মালিক পক্ষ থেকে বাগান পরিচালনার জন্য মার্চ মাস থেকে কোন টাকা দেওয়া হচ্ছে না। বাগানের বিদ্যুৎ গত বছরের অক্টোবর থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ক্যাপটিভ পাওয়ার দিয়ে ফ্যাক্টরি চালানো হয়। সার্বিক পরিস্থিতিতে এই মুহূর্তে বাগান চালানো সম্ভব হচ্ছে না। শ্রমিকরাও মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাদের দাবির সাথে আমরাও একমত। বাগান বন্ধ হয়ে গেলে এতো মানুষ অসহায় হয়ে পড়বে। ইতিমধ্যে আমরা চেয়েছিলাম চাকরি ছেড়ে চলে যেতে কিন্তু শ্রমিকদের অনুরোধে তাদের বিপদে পাশে থাকার চেষ্টা করছি। শ্রমিকদের সাত সপ্তাহের মজুরি ও নয় সপ্তাহের রেশন বকেয়া রয়েছে।

তিমির বনিক/এস আই আর

- Advertisement -spot_img

রাজনীতি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আবেদন করতে ব্যানারে ক্লিক করুন...spot_img

সর্বশেষ সব খবর