জাবি প্রতিনিধি: আন্তর্জাতিক হিজাব দিবস উপলক্ষ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো ‘হিজাব র্যালি’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ বুধবার (৫ই ফেব্রুয়ারি) বেলা তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন রেজিস্ট্রার ভবন থেকে র্যালিটি শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনারে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। আন্তর্জাতিক হিজাব দিবস উপলক্ষ্যে র্যালির আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কুরআন এন্ড কালচারাল স্টাডি ক্লাবের নারী শাখা।
উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শামীমা নাসরিন জলি বলেন, “গত ১লা ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক হিজাব দিবস ছিল। এটি গত ১২ বছর যাবৎ বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসলেও বাংলাদেশে এবার প্রথম। আমরা বিভিন্ন জায়গায় হিজাব পরার জন্য লাঞ্ছিত হতে দেখি, সেটার বিপরীতে আমরা এটি করছি। হিজাব আমাদের অধিকার ও আধুনিকতা। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, যারা অভিজাত, ভদ্র, মুসলিম ও বিশ্বাসী নারী তারা পর্দা করবে। পর্দার ব্যাপারে সচেতনতা বাড়ানোর জন্যই আমরা আজকে এ র্যালি ও সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করেছি।”
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, “পশ্চিমা বিশ্বের একজন নারী অধিকার কর্মীর একটা বক্তব্য শোনার পর আমার মধ্যে নতুন একটা বোধের সৃষ্টি হয়। তিনি বলেছেন, ‘মানব সভ্যতার বিকাশের সাথে কাপড় পরিধানের এক বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। অর্থাৎ সভ্যতার পূর্ব যুগে মানুষ কাপড় পরিধান করতো না।’ যখন আমরা বলি আমরা সভ্য হয়েছি এর মানে আমরা বলি আমরা কাপড় পরা শিখেছি। তাহলে কেউ যদি কাপড়ের পরিমাণ নির্ধারণ করতে গিয়ে হিজাবটাকে সংযুক্তি করে তাহলে এটা কীভাবে সভ্যতার পরিপন্থি হয়? হিজাব শুধু নারীদের অধিকার নয়, এটা সভ্যতার একটি উপাদানও বটে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান বলেন, “মায়ের দুধ পান করা যেমন সন্তানের অধিকার, ঠিক তেমনই হিজাবকে ধারণ করা আমাদের অধিকার। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এটা আমাকে বলতে হবে কেন? অধিকার হরণ করতে করতে পৃথিবীর নিয়ম এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে, সেটাকে স্মরণ করে দিতে হচ্ছে। আমি শুধু এটুকুই বলব হিজাব পরা যেমন আমার মা-বোনদের অধিকার তেমনই সে অধিকার নিশ্চিত করা আমাদেরও দায়িত্ব।”
দর্শন বিভাগের ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দিকা মেঘলা বলেন, “মুসলিম প্রধান একটি দেশে মুসলিম নাগরিক হিসেবে হিজাব পরার অধিকার চাওয়া একই সাথে হাস্যকর এবং বেদনাদায়ক। ইসলামে যেখানে হিজাব পরা বাধ্যতামূলক সেখানে কেন আমাকে হিজাবের জন্য অধিকার চাইতে হবে? হিজাবকেও পোশাকের স্বাধীনতার আওতায় আনতে হবে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সময় ইসলামি বিধিনিষেধ মানার জন্য আমাদের বিভিন্ন ট্যাগিংয়ের শিকার হতে হতো। আমরা এসব ট্যাগ থেকে মুক্তি চাই৷”
মোঃ আরিফ হোসেন/এমএ