সোমবার, মে ২০, ২০২৪
spot_img

জাবিতে ধর্ষণের প্রতিবাদে রাবিতে বিক্ষোভ, ছাত্রলীগের ‘বাধা’

মাফুজুর রহমান ইমন,রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল আটটি ছাত্রসংগঠন। আজ সোমবার দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছন থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সৈয়দ নজরুল প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে ছাত্রলীগ ও শেখ হাসিনা বিরোধী স্লোগান দেওয়ায় ছাত্রলীগ তাদের কর্মসূচিতে বাধা প্রদান করেছে বলে অভিযোগ করেছে ছাত্রসংগঠনগুলো। তবে বাধা প্রদানের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।

মিছিলে ‘জাবিতে ধর্ষক কেন, শেখ হাসিনা জবাব চাই’, ‘ধর্ষক তৈরির কারখানা জ্বালিয়ে দাও, পুড়িয়ে দাও’, ‘শিক্ষা-সন্ত্রাস, একসাথে চলে না’, ‘আমার বোন ধর্ষিত কেন, শেখ হাসিনা জবাব চাই’, ‘ছাত্রলীগের কালো হাত, জ্বালিয়ে দাও পুড়িয়ে দাও’, ‘রুখে দিতে ধর্ষণ, রাবি করো গর্জন’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা।

মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকে সংগঠনগুলো। এমন সময় বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব তার নেতাকর্মীসহ সেখানে উপস্থিত হয়ে তাদের ‘আপত্তিকর’ স্লোগানের প্রতিবাদ করেন। তবে বিষয়টিকে গণতান্ত্রিক অধিকারে ‘বাধা’ প্রদান হিসেবে বলছেন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী ছাত্র সংগঠনগুলো।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী’র সভাপতি শাকিল হোসেন বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতা কর্তৃক এক নারী ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে আমরা একটি বিক্ষোভ মিছিল করি। এতে আমরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকি। এমন সময় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গালিব এসে আমাদেরকে বলে ছাত্রলীগ ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া যাবে না। একটা গণতান্ত্রিক দেশে আমরা দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে জবাব চাইতেই পারি। এটা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নিষেধ করার কে? তিনি তার নেতাকর্মী দিয়ে আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারে বাধা প্রদান করেছেন। আমাদের কণ্ঠরোধের চেষ্টা করেছেন।’

বাধা প্রদানের বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা হিল গালিব বলেন, ‘জাবিতে ধর্ষণের অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। আমরাও এর প্রতিবাদ জানাই। কিন্তু এর দায় তো ব্যক্তির, কোনো সংগঠনের নয়। তাই তারা যখন ছাত্রলীগ ও আমাদের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছিলো আমি তার প্রতিবাদ করেছি। এবং এটাও বলেছি তোমরা যতবার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে স্লোগান দিবা, আমি ততবার তোমাদের সামনে এসে এর প্রতিবাদ করবো। এই বলে আমি চলে এসেছি। আমি তাদের কর্মসূচিতে কোন ধরণের বাধা প্রদান করিনি।’

বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহবায়ক ফুয়াদ রাতুল বলেন, ‘ধর্ষণ করার জন্য চাই ক্ষমতা, তাদের ক্ষমতা থাকার কারণে তারা ধর্ষণ করে। সারাদেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করে তারা সবখানে দখলদারিত্ব করতেছে। বর্তমানে একটি সংগঠন ধর্ষক তৈরির কারখানায় পরিণত হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের দুর্বার আন্দোলন করতে হবে।’

রাবি শাখা ছাত্র ফেডারেশন সভাপতি রায়হান আলী বলেন, ‘ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে এসে ছাত্রলীগ আমাদের বাঁধা দিতে আসছে। আমাদের এখন বিচার দিতে হয় শেখ হাসিনাকে কারণ বিচার বিভাগ তার আয়ত্তে। নোয়াখালীর সুবর্ণচর, সিলেট এমসি কলেজে যারা ধর্ষণ করেছে তারা সবাই ক্ষমতাসীন দলের লোক। সকল কিছু জবাবদিহিতার উর্ধ্বে উঠে গেছে। যার কারণে তারা বারবার ধর্ষণ করে যাচ্ছে।’

নাগরিক ছাত্র ঐক্য’র কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মেহেদী হাসান মুন্না বলেন, ‘তারা অপকর্ম করার পরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে না। হলে সিট বাণিজ্য করার লাইসেন্স থেকে শুরু করে ধর্ষণ করার লাইসেন্সও প্রশাসন তাদেরকে দিয়ে দিয়েছে। যার ফলে তার বারবার অপকর্ম করে যায়। তারা আমাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে চেপে রাখতে চায়। আমাদের সকলকে তাদের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন করতে হবে।’

এসএ

- Advertisement -spot_img

রাজনীতি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আবেদন করতে ব্যানারে ক্লিক করুন...spot_img

সর্বশেষ সব খবর