রবিবার, এপ্রিল ২৮, ২০২৪
spot_img

ইসলাম কোনো বিধবাকে ঘৃণা বা অবজ্ঞার চোখে দেখে না

হাসান আহমেদ: আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর স্ত্রীদের মধ্যে আয়েশা (রাঃ) ছাড়া অন্য সব স্ত্রী ছিলেন বিধবা কিংবা তালাকপ্রাপ্তা।

কোরআনুল কারীমে বিধবা নারীদের বিয়ে সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘আর তোমাদের মধ্যে যারা মৃত্যুবরণ করবে এবং তাদের নিজেদের স্ত্রীদের রেখে যাবে, সে স্ত্রীদের কর্তব্য হলো নিজেরা চার মাস দশ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা (ইদ্দত পালন) করবে। তারপর যখন ইদ্দত পূর্ণ করে নেবে, তখন নিজের ব্যাপারে নীতি সঙ্গত ব্যবস্থা নিলে কোনো পাপ নেই। আর তোমাদের যাবতীয় কাজের ব্যাপারেই আল্লাহর অবগতি রয়েছে’ সূরা বাকারা : ২৩৪।

বিধবার অধিকারের বিষয়ে পবিত্র কোরআনপাকে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ, নারীদের জোরপূর্বক উত্তরাধিকারের পণ্য হিসেবে গ্রহণ করা তোমাদের জন্য বৈধ নয় এবং তোমরা তাদের যা প্রদান করেছ তার কোনো অংশ তাদের কাছ থেকে নিয়ে নেয়ার জন্য তাদের আটকে রেখো না; যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা ব্যভিচারে লিপ্ত হয় তাদের সঙ্গে সদ্ভাবে জীবনযাপন কর, এমনকি তোমরা যদি তাদের পছন্দ নাও কর, এমনো তো হতে পারে যা তোমরা অপছন্দ কর, তাতেই আল্লাহ অনেক কল্যাণ রেখেছেন’। (সূরা নিসা : ১৯)। বিধবা নারীদের মর্যাদা সম্পর্কে অনেক হাদিস বর্ণিত হয়েছে।

হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত। রাসূল সা. বলেছেন, আমিই ঐ ব্যক্তি যার জন্য সর্ব প্রথম জান্নাতের দরজা খোলা হবে। কিন্তু এক মহিলা এসে আমার আগে জান্নাতে যেতে চাইবে। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করবো যে, তোমার কি হল? তুমি কে? তখন সে বলবে, আমি ঐ মহিলা যে স্বীয় এতিম বাচ্চার লালন পালনের জন্য নিজেকে আটকে রেখেছে [বিবাহ করা থেকে]। (মুসনাদে আবী ইয়ালা, হাদীস নং-৬৬৫১) যেসব বিধবা বিয়ের যোগ্য বয়সের নয়, আবার তাদের কোন সন্তানও নেই। সেসব বিধবাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়াকে অনেক বড় পূণ্যের কাজ বলে রাসূল (সাঃ) ঘোষণা দিয়েছেন। যেমন- হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত।

রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, বিধবা এবং মিসকিনের সহযোগিতাকারী আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারীর ন্যায়, বা সর্বদা রাতে নামাযরত ও দিনের বেলা রোযাদার ব্যক্তির মত। (সহীহ বুখারী) স্বামীর মৃত্যুর পর তারা এক বছর পর্যন্ত ভরণ-পোষণ পাওয়ার অধিকার রাখেন। বিয়ের সময় স্বামীর পক্ষ থেকে প্রাপ্ত মোহরানা, স্বামীর মৃত্যুর পর উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি এবং পিতার পক্ষ থেকে প্রাপ্ত যে সম্পদ নারীরা পান তা একান্তভাবেই তাদের। তাছাড়া যে বিধবাদের বিয়ের বয়স পেরিয়ে গেছে এবং তাদের কোনো সন্তানও নেই। তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়াকে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) অনেক পুণ্যের কাজ বলে ঘোষণা দিয়েছেন।

সুতরাং স্বামীর মৃত্যুর পর পরিবার কর্তৃক তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা মোটেই উচিত নয়। কোনো বিধবাকে সারা জীবন অবিবাহিত অবস্থায় একাকিত্ব জীবন কাটানোর কোনোরূপ বাধ্যবাধকতা ইসলামে নেই। হজরত রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সামাজিক ভ্রাতৃত্ববোধ প্রতিষ্ঠা, মানবিক কারণ, ধর্মীয় শিক্ষার প্রচার-প্রসার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে, বিশেষ করে তৎকালীন আরবের কুসংস্কার উচ্ছেদ করার জন্য এসব বিয়ে করেছিলেন। বিধবা বিয়ে সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে কারিমে নানাভাবে উপদেশ ও উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে।

ইসলাম বলে বিধবা নারী যাকে খুশি তাকে বিয়ে করতে পারবে। ইসলাম কোনো বিধবাকে ঘৃণা বা অবজ্ঞার চোখে দেখে না।

- Advertisement -spot_img

রাজনীতি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আবেদন করতে ব্যানারে ক্লিক করুন...spot_img

সর্বশেষ সব খবর