নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁ জেলার ধামইরহাট উপজেলায় ডিজিটাল যুগের নানা সুবিধা এবং আধুনিক প্রযুক্তির উন্নয়নের পরেও মেমোরি কার্ড লোডের ব্যবসা এখনও তুমুল জনপ্রিয়। স্মার্টফোন এবং উচ্চ গতির ইন্টারনেট সেবার প্রাপ্যতা থাকা সত্ত্বেও এই ব্যবসার ধারাবাহিকতা এবং প্রাসঙ্গিকতা অক্ষুণ্ণ রয়েছে।
সরজমিনে, ধামইরহাটের আমাইতাড়া বাজারের কাউন্সিল মার্কেটে বেশ কয়েকটি দোকানে দেখা যায়, মোবাইল ফোনের জন্য মেমোরি কার্ডে গান, ভিডিও, ছবি এবং বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ্লিকেশন লোড করার জন্য মানুষের ভিড়। এখানকার স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, অনেক মানুষ এখনও ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারেন না কিংবা মোবাইল ডাটা ব্যবহারে সাশ্রয়ী থাকতে চান। তাদের জন্য মেমোরি কার্ড লোড একটি সহজ এবং সাশ্রয়ী পদ্ধতি।
ব্যবসায়ীরা আরও জানান, মেমোরি কার্ড লোডের কাজ তারা অনেক বছর ধরেই করে আসছেন এবং এটি তাদের আয়ের প্রধান উৎস। অনেক গ্রাহক আছেন যারা স্মার্টফোন ব্যবহার করলেও ইন্টারনেট ডাটা ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না কিংবা নির্দিষ্ট কনটেন্ট যেমন, সিনেমা, গান বা নাটক ডাউনলোড করতে চান না। এই সব গ্রাহকের জন্য মেমোরি কার্ড লোড করা একটি নিরাপদ এবং সহজ পন্থা। এছাড়া, এটি তাদের অর্থনৈতিকভাবে সাশ্রয়ী করে তোলে।
ধামইরহাটের ব্যবসায়ী রেজা বলেন, “আমাদের এখানে ইন্টারনেটের গতি বিশেষ করে গ্রাম্য এলাকায় সবসময় ভালো থাকে না। অনেক সময় গ্রাহকরা ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত জ্ঞান রাখেন না। ফলে, তারা মেমোরি কার্ড লোড করাকেই প্রাধান্য দেন।”
আরেক ব্যবসায়ী শাহীন সরকার বলেন, “আমরা বিভিন্ন ধরনের গান, সিনেমা, নাটক এবং অ্যাপ্লিকেশন মেমোরি কার্ডে লোড করে দেই। এর জন্য আমরা গ্রাহকদের কাছ থেকে সামান্য ফি নিয়ে থাকি। এতে করে আমাদেরও আয় হয় এবং গ্রাহকরা তাদের প্রয়োজনীয় কনটেন্ট সহজে পেয়ে যান।”
স্থানীয় গ্রাহকরা জানান, ইন্টারনেট ব্যবহারে তাদের অনেক সময় সমস্যা হয় এবং মোবাইল ডাটা খরচও অনেক বেশি হয়। তাই তারা মেমোরি কার্ডে কনটেন্ট লোড করাকেই নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী মনে করেন।
তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়ন সত্ত্বেও মেমোরি কার্ড লোডের ব্যবসার এই ধারা স্থানীয়দের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে আছে। সাধারণ মানুষের ধারণা, ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা এবং তথ্যপ্রযুক্তির আরও উন্নয়ন হলে ধীরে ধীরে এই ব্যবসার উপর নির্ভরশীলতা কমে আসতে পারে। তবে বর্তমানে এটি ধামইরহাটের বিনোদন ও সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসাবে রয়ে গেছে।
মো: এ কে নোমান/এমএ